শিক্ষাবিদ চিন্তক কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের প্রয়াণ

আজ শুক্রবার বিকেল ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক, প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক, গল্পকার, প্রাবন্ধিক ও সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আর নেই। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের পরিবার, বন্ধু ও স্বজনেরা জানিয়েছেন, আজ মরদেহ বারডেমের হিমঘরে রাখা হবে। আগামীকাল শনিবার সকাল ১১টায় সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাঁর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। এরপর বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা হবে। পরে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হতে পারে।
১৯৫১ সালের ১৮ জানুয়ারি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তাঁর বাবার নাম সৈয়দ আমীরুল ইসলাম ও মায়ের রাবেয়া খাতুন। তিনি সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ সালে মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৬৮ সালে সিলেট এম সি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও ৭২ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করেন। ১৯৮১ সালে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইয়েটস-এর কবিতায় ইমানুয়েল সুইডেনবার্গের দর্শনের প্রভাব বিষয়ে পিএইচডি করেন। পেশাগত জীবনে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরের পর তিনি ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে যোগ দেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য গল্পগ্রন্থগুলো হলো- স্বনির্বাচিত শ্রেষ্ঠ গল্প (১৯৯৪), থাকা না থাকার গল্প (১৯৯৫), কাঁচ ভাঙ্গা রাতের গল্প (১৯৯৮), অন্ধকার ও আলো দেখার গল্প (২০০১), প্রেম ও প্রার্থনার গল্প (২০০৫), সুখদুঃখের গল্প, বেলা অবেলার গল্প ।
উপন্যাসগুলো হলো- আধখানা মানুষ্য (২০০৬), দিনরাত্রিগুলি, আজগুবি রাত, তিন পর্বের জীবন, যোগাযোগের গভীর সমস্যা নিয়ে কয়েকজন একা একা লোক, ব্রাত্য রাইসু সহযোগে, কানাগলির মানুষেরা ।
প্রবন্ধ ও গবেষণাগ্রন্থগুলো হলো নন্দনতত্ত্ব (১৯৮৬), কতিপয় প্রবন্ধ (১৯৯২), অলস দিনের হাওয়া, মোহাম্মদ কিবরিয়া, সুবীর চৌধুরীর সহযোগে, রবীন্দ্রানাথের জ্যামিতি ও অন্যান্য শিল্পপ্রসঙ্গ।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত, কাজী নজরুল ইসলাম, শামসুর রাহমানেরর উপর তাঁর উল্লেখযোগ্য গবেষণা কর্ম রয়েছে। সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৬ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হন, ২০১৮ সালে একুশে পদক অর্জন করেন।