স্যাটানিজম

এই রাস্তাটা দিয়ে লিওন যতবার যায় খুব অবাক হয়। গত দশ বছর আগেও এর চারপাশের এলাকাটা পরিত্যক্ত ছিল। দিনে যাও মানুষ আসতো রাতে তো একদমই না। আর সেখানে আজকে বড় বড় শপিংমল থেকে শুরু করে স্কুল, কলেজ সবই গড়ে উঠেছে। প্রচুর মানুষের আসা যাওয়া দিন রাতে।আসছে বছর নাকি কার্নিভালও হবে এখানে। ধীরে ধীরে পরিত্যক্ত জায়গাগুলো আর পরিত্যক্ত থাকছে না।
এই রাস্তার শেষ মাথায় লিওনের অফিস। লিওন মেথারসন, পঁয়ত্রিশ বছর বয়স, অবিবাহিত একজন যুবক, চাকরি করে একটা রেন্ট এ কারের অফিসে। আগে লন্ডন শহরে থাকলেও এখন চলে এসেছে শহর থেকে অনেক দুরের এই গ্রামে। কিছুটা নিরিবিলি, শান্ত। এটাই তার ভালো লাগে। প্রথম প্রথম খুব কষ্ট হয়েছে, থাকার জন্য বাড়ি খোঁজা, নতুন জায়গা সব অচেনা। তারপর ছিল না কোন কাজ। এমন একটা গ্রামে কাজ খুঁজে পাওয়া অনেক কষ্ট। ছোটখাটো কাজ করে দিন চলছিল। অনেক দিন অপেক্ষার পর যখন জমান টাকা গুলোও প্রায় শেষ হতে চলছিল ঠিক তখনি এই কাজটা পায় সে। অফিস সহকারি, তার বস এলিজাবেথ সাইত্রিশ বছরের একজন সুন্দরি সিঙ্গেল মাদার। এলিজাবেথের জন্যই আসলে তার চাকরিটা হয়েছে। মালিক তাকে নাই করে দিয়েছিল, এলিজাবেথের হয়তো তার প্রতি দয়া হয়েছিল। আর চাকরিতে ঢোকার পর লিওন তার কাজ দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে এলিজাবেথ ভুল করেনি।
দরজা খুলে অফিসে ঢুকল। পেছনের জানিটর রুম থেকে মপটা এনে পুরো অফিসটা পর করল। আসলে শুধু মাত্র হিশাব-নিকাশ রাখতে হবে এই কথা বলে কাজে নিলেও লিওনকে সব কাজই করতে হয়। এমন কি নিয়ম করে পাশের দোকান থেকে এলিজাবেথের জন্য কফিটাও ওর আনতে হয়। আর এই জন্যই হয়তো এলিজাবেথ ওর ওপর এত খুশি। লিওনের মনেও এই নিয়ে কোন ক্ষোভ নেই। এই দুর্যোগের বাজারে যে তার একটা কাজ আছে এতেই সে খুশি।
ঠিক দশটায় এলিজাবেথ অফিসে আসল। খুব ক্লান্ত লাগছে তাকে, মনে হচ্ছে কোন একটা চিন্তা তার মাথায় ঘুরে বেরাচ্ছে। লিওন তাকে কফির কাপটা এগিয়ে দিয়ে বলল, “এলি সব ঠিক আছে তো?”
কিছুটা আনমনে হয়ে এলিজাবেথ কফিটাতে চুমুক দিল, তারপর বলল “ লিও এলেন কে নিয়ে খুব চিন্তায় আছি”
এলেন, এলিযাবেথের ছেলে, বয়স তেরো, সে খুব ছোট থাকতেই ওর বাবা ওদের ছেড়ে চলে যায় তারপর থেকে এলিজাবেথ একা ওকে মানুষ করেছে। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে ওকে সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে সে। এই বাড়ন্ত বয়সে এলেন কে সামলানো খুব মুশকিল। সে কি চায়, কি চায় না বুঝতে গিয়ে এলিজাবেথ যেন অথৈ সাগরে পড়েছে। লিওনে তার ভরসা। কারন এলেন একমাত্র লিওনের সাথেই মন খুলে কথা বলে। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন এলিজাবেথ লিওনেকে তাদের পরিবারের সদস্যই করে নিয়েছে। প্রতি শনিবার এলিজাবেথের বাসায় লিওনের দাওয়াত থাকে। আসলে এই শহরে এলিজাবেথেরও পরিচিত লোক খুব কম তাই লিওনের মত একজন বিশ্বস্ত বন্ধু পেয়ে সে তাকে হারাতে চায় না। আর এভাবেই এলেনের সাথে লিওনের বন্ধুত্ব গভীর হয়।
—কি হয়েছে খুলে বলো।’ লিওন বলল
—আমার ছেলেটা জানি না কাদের সঙ্গে পরে বেশ কিছুদিন ধরে অদ্ভুত সব কাজ করছে।
—যেমন?
—স্যাটানিজম…(এলিজাবেথ এই টুকু থেমে গেল।)
— স্যাটানিজম? মানে শয়তানের উপাসনা?
— হ্যাঁ লিও…সে প্রায়ই তাদের সভাতে যায় এবং সেখানে সে টাকা দেয়, প্রথম প্রথম চাইত আমার কাছে আমি দেইনি বলে এখন না বলে চুরি করে নিয়ে নেয়…
—কিন্তু এটা তো সম্পূর্ণ বেআইনি। এরা লোক ঠকিয়ে টাকা নেয়। তুমি পুলিশ কে কেন বলোনি?
—আমি বলেছিলাম, কিন্তু এরা কিভাবে যেন খবর পেয়ে যায়, পুলিশ যেয়ে কিছুই পায় না। যে ঠিকানায় দেয়া ছিল একবার যেয়ে দেখেছে সেখানে দুই বুড়োবুড়ি থাকে, পরের বারের ঠিকানায় যেয়ে দেখেছে সেখানে একটা জন্মদিনের পার্টি হচ্ছে। দুইবারই ভুল তথ্য দিয়ে তাদের সময় নষ্ট করবার জন্য আমাকে ক্ষমা চাইতে হয়েছে। কিন্তু লিও বিশ্বাস কর আমি জানি কিছু একটা হচ্ছে আমি ভুল বলিনি। কোনো না কোনো ভাবে এই চক্রটা খবর পেয়ে নিজেদের সরিয়ে নেয়। আর এরা আমার এলেনের মত অবুঝ বাচ্চাদের কাছ থেকে বিভিন্ন কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। না জানি আমার ছেলেটা কোন বিপদে জড়িয়ে পরছে।
ফুপিয়ে কেঁদে উঠল, এলিজাবেথ। লিওনের দিকে একটা কাগজ এগিয়ে দিল।
—এটা এলেনের বইয়ের ভেতরে পেয়েছি
কাগজটা হাতে নিল লিওন। সাদা একটা কাগজে শুধু একটা কথা লেখা “সমাধান তার কাছে” পাশে একটা শিং ওয়ালা বিকট চেহারার জন্তুর ছবি এবং একটা ফোন নাম্বার দেয়া।
লিওন অনেকক্ষণ দেখল ছবিটা তারপর বলল—চিন্তা করো না এলি, এবার আমি যাব ওখানে, তুমি আর পুলিশকে কিছু বলো না”।
খোদ ইংল্যান্ড এ যত ভুতের বাড়ি আছে আর কোথায় বোধ হয় এত নেই। বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা এই হন্টেড হাউসগুলো আসলেই কতটা সত্যি কে জানে? তবে সত্য আর মিথ্যা যাই হোক তাদের ঘিরে গড়ে উঠেছিল বিশাল এক চক্র— যারা নিজেদের তান্ত্রিক, শয়তানের উপাসক বলে পরিচয় দিত, সব সমস্যার সমাধান করবে লুসিফার (তথাকথিত শয়তান) অথবা বাইল ( খ্রিস্টান ধর্ম মতে, তিনি নরকের সাতজন যুবরাজের মধ্যে অন্যতম একজন। তাকে কেউ কেউ শয়তানদের উচ্চপদস্থ কেউ বা তাকেই শয়তান মনে করে।)। মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিতো প্রচুর টাকা। এই চক্রের প্রভাব যখন ভয়াবহ আকারে বেড়ে গেল, বেড়ে গেল অপরাধের আকার। দিন দুপুরে খুন হতে লাগল। টনক নড়ল প্রশাসনের। পুলিশের সক্রিয়তায় এখন অনেক কমে গেলেও আজও এই চর্চা হয় তবে আড়ালে।
কাগজটায় থাকা ফোন নাম্বারে ফোন দিয়ে অনেক জেরার পর জেনে নিয়েছে আজ ওদের একটা বিশেষ সভা আছে, যেখানে কথা বলবেন একজন বড় তান্ত্রিক। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ঠিক রাত আটটায় লিওন এসেছে, এন্ট্রি ফি বিশ পাউন্ড দিয়ে ভেতরে ঢুকে ছোট্ট একটা রুমে লিওনসহ আর অনেকে বসে আছে। আবছা অন্ধকারে তেমন কাউকে দেখা যাচ্ছে না। আশেপাশে আয়োজকদের কয়জন কেমন অদ্ভুত পোশাক পরে মুখে জন্তুর মুখোশ পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এটা কি লুসিফার উপাসকদের রীতি নাকি সবার কাছে থেকে নিজেদের চেহারা লুকিয়ে রাখা সেটা লিওনের জানা নাই। হঠাৎ আলো একটু উজ্জ্বল হল। সবাই একটু নড়েচড়ে বসল। লিওন এবার উপস্থিত সবাইকে ভালো করে দেখতে পেল।বেশির ভাগই কিশোর-কিশোরী, কেউ কেউ প্রাপ্ত বয়স্ক আছেন কিন্তু সেটা সংখ্যায় কম। আসলে এই কিশোর বয়সটাতে হয়তো অতিপ্রাকৃত বিষয়গুলোর ওপর আগ্রহ বেশি থাকে। যেমন আছে এলেনের। এলিজাবেথের কাছে শুনেছে সে নাকি রীতিমত স্যাটানিজম চর্চা শুরু করে দিয়েছে। তার ঘরে নাকি কি সব অদ্ভুত অদ্ভুত জিনিস পাওয়া যায়!
“ আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ এখানে আসার জন্য” লিওনের ভাবনায় ছেদ পড়ল। তাদের সামনে একটা ছোট্ট মঞ্চের মত সেখানে দাড়িয়ে আছে একজন মাঝারি গড়নের লোক। তাকে পুরোপুরি বোঝা যাচ্ছে না কারণ সে একটা কালো রঙের বড় ঢিলেঢালা পোশাক পড়ে আছেন, মুখে শিয়ালের মুখোশ পড়া। এরা সবাই খুব চালাকির সাথে নিজেদের চেহারা ঢেকে রেখেছে। লোকটি আবার বলতে শুরু করল ‘আপনাদের মাঝে যারা সত্যি প্রভু লুসিফারে বিশ্বাসী তারা শুধু থাকবেন আর যার স্রেফ মজা করতে বা খেলার ছলে এসেছেন তারা চলে যান, এটা মজা করার জায়গা না। তাকে অবিশ্বাস করা মানে তাকে অসম্মান করা, আর তাকে অসম্মান করার ফলাফল কখন ভালো হয় না।’ উপস্থিত সবার মাঝে আর মনযোগী ভাব ফুটে উঠল। সবাই নিজেকে লুসিফারের একনিষ্ঠ অনুসারী হিসাবে প্রমাণ করতে চায়।
লোকটি আবার বলতে শুরু করে “ আমি দীর্ঘদিন ধরে তার উপাসনা করে আসছি, বিপথগামীদের কাছে সে শত্রু হলেও আমার, আমাদের সবার কাছে সে প্রভু। প্রভুকে খুশি করা আমাদের দায়িত্ব।এখানে একটা দান বাক্স আছে যার যা খুশি দিতে পারেন, প্রভু খুশি মানে আপনার জীবন বিপদমুক্ত। কেউ যদি বিশেষ কোন ইচ্ছা নিয়ে এসে থাকেন পাশের ঘরে রয়েছে ‘হর্ণ অফ স্যাটান” (শয়তানের প্রতীক হিসেবে বিভিন্ন সভ্যতার মানুষের বিশ্বাস হচ্ছে- শিং। ব্ল্যাক ম্যাজিক চর্চায় শিং অপরিহার্য।) সেটা ছুয়ে একশত পাউন্ড বাক্সে ফেলে আমাদের “কিনডকি” (স্যাটানিজম চর্চা করা নারী বা ডাইনী, যাদের আফ্রিকান ভাষায় কিনডকি বলা হয়) কাউকে আপনার সমস্যার কথা বলে যান, তিন দিনের মাঝে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তবে আপনার সমস্যা অনুযায়ী প্রভুকে খুশি করতে আপনাকে আর কিছু দান করতে হতেও পারে।“
লিওনে মনে মনে হাসলও। মূলত আস্তিক স্যাটানিজমে কালো জাদুর মাধ্যমে নিজের স্বার্থসিদ্ধি বা হিংসা, আক্রোশের শোধ নেয়া হয়। প্রকৃত স্যাটানিস্টদের কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয় যেমন শুদ্ধ ভাবে এবং সঠিক উচ্চারণে মন্ত্র পড়া, কারণ মন্ত্রের প্রতিটি শব্দের আলাদা আলাদা শক্তি আছে, যদি কোন আত্ম বা শয়তানকে ডাকা হয় অবশ্যই তার প্রকৃত নাম জেনে নেয়া। সর্বোপরি যিনি এই সব করছেন তাকে প্রচণ্ড মানসিক শক্তির অধিকারী হতে হবে কারণ তার নিজেরও জীবনের ঝুঁকি থাকে। আর এরা? এরা করছে ব্যবসা। সবার চোখে পর্দা টেনে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এই চক্রগুলো কাজ করে এভাবে হয়তো কেউ কোন অভিযোগ করলেন তার প্রতিবেশিকে সে শাস্তি দিতে চায়। তখন এরা তার ঠিকানা রেখে রাতের আধারে এদের লোক পাঠিয়ে প্রথমে তাদের ছোট কোন ক্ষতি করবে, হতে পারে বাগানের গাছ উপড়ে দিবে বা বাড়ির দরজায় কোন প্রাণী বীভৎসভাবে মেরে ফেলে রেখে যাবে। এসব দেখে অভিযোগকারীর বিশ্বাস বেড়ে যাবে আর এরপর সে টাকা ঢেলেই যাবে। কখন কখন এটা মানুষ খুন পর্যন্ত চলে যায়।
লোকটি আবার বলতে লাগল—‘গতকাল আমি বোরলি রেকটোরির সন্ন্যাসিনীর সাথে কথা বলেছি। সে বলছে আমাদের জয় নিশ্চিত। খুব শিগরিই আমরা এই পৃথিবীকে নিজের করে নিব, আড়ালে নয় প্রকাশে হবে প্রভুর গুনগান। তবে তার জন্য আমাদের লোকবল বাড়াতে হবে। আপনারা আপনাদের কাছের লোকদের দাওয়াত দিন, তাদেরকে আমাদের কাছে নিয়ে আসুন, তবে সাবধান আমাদের শত্রুরা যেন না জানে।’
লিওনে এইবার শব্দ করে হেসে উঠল। ইংল্যান্ডে বিখ্যাত একটি ভৌতিক বাড়ি হিসাবে মনে করা হয় বোরলি রেকটোরি। একটি খুব প্রচলিত গল্প আছে যে বাড়িটি যাজকপল্লীতে রূপান্তরিত হবার পর একজন যাজকের সাথে একজন সন্ন্যাসিনীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই ঘটনা জানাজানি হবার পর যাজককে ওখান থেকে সরিয়ে নেয়া হয় এবং ঐ সন্ন্যাসিনীকে পাথর নিক্ষেপ করে মারা হয়। আর তারপর থেকে নাকি ওখানে প্রায়ই সন্ন্যাসীনীকে দেখা যায়, ভৌতিক সব কাণ্ড ঘটে। তবে ইতিহাস যাই হোক তান্ত্রিক লিওনের হাসির শব্দে খুব বিরক্তির চোখে তাকাল। রুমের সবাই লিওনের দিকে তাকিয়ে আছে, ভীষণ বিরক্ত লিওনের এই বেয়াদবিতে।
‘আমি কি জানতে পারি আপনি কেন হাসছেন?’ তান্ত্রিকের রুক্ষ স্বর।
‘যত মানুষ আসবে ততো বেশি পাউন্ডে ভরে যাবে বাক্স’ লিওনে বলল।
তান্ত্রিকের চোখে যেন আগুন জ্বলছে। আয়োজকরাও লিওনেকে ঘিরে ধরেছে।
‘রবার্ট, পুরো নাম রবার্ট উইলিয়াম। গত পাঁচ বছর ইংল্যান্ডের জেলে কাটিয়ে এখন এসে পাড়ি জমিয়েছেন এখানে। স্যাটানিজম এর নাম করে লোক ঠকিয়ে প্রচুর টাকা ইনকাম করেছিলেন ইংল্যান্ডে ভালই চলছিল দিন, মাঝে সোফিয়া নামের মেয়েটিকে খুন করার দায়ে ধরা পরে গেলেন। এই যাত্রায় দলের কেউও বাঁচাতে পারল না আপনাকে। শেয়ালের মুখোশ আর বড় আলখেল্লা পরলেই কি নিজে কে পুরো ঢেকে ফেলা যায় রবার্ট?’
মুখোশের ফুটো দিয়ে তান্ত্রিক উরফে খুনি রবার্টের চোখদুটোতে স্পষ্ট ভয় দেখা যাচ্ছে। আশে পাশের সবাই যেন পাথর হয়ে গেসে। আয়োজকদের অনেকে পালিয়ে গিয়েছে এর মাঝেই। কাপা স্বরে বলল রবার্ট “ কে আপনি? পুলিশের লোক?”
চেয়ার ছেড়ে উঠে মাথায় হ্যাটটা পরতে পরতে বলল লিওনে “ আমি তাদের একজন যাদের কথা এখানে বলছেন।“
আগামীকালের সূর্য উঠার আগে এই রবার্ট আর তার দলের লোক এই গ্রাম ছেড়ে পালাবে সন্দেহ নেই।
আস্তিক বা নাস্তিক স্যাটানিজম, লুসিফার অথবা বাইল, ব্ল্যাক অথবা হোয়াইট ম্যাজিক এর কোনটাই এরা করছে না। লোক ঠকিয়ে পয়সা নিচ্ছে শুধু। লিওন একজন প্রচণ্ড ধর্ম অনুরাগী, প্রভুভক্ত মানুষ। তার ধর্ম এবং প্রভুকে নিয়ে কোন ব্যবসা সে পছন্দ করে না। প্রভুর চাওয়াতেই শহর ছেড়ে এই গ্রামে এসে নিঃসঙ্গ এলিজাবেথ আর কিশোর এলেনের সাথে বন্ধুত্ব করেছে, বিশ্বাস অর্জন করেছে সে।
চাঁদটা ঢেকে গেছে কালো চাদরে, বাতাসে ফিসফিসানির সাথে দুর্গন্ধটা বেড়ে চলছে। দ্রুত বাড়ি যেতে হবে, তার সাথে মিলিত হবার সময় হয়ে গেছে।
ডানা মির্জা : কবি ও লেখক