ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনসিসিতে কাটানো দিনগুলো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেন আমার জীবনের জন্য অনন্য পাওয়া। যা আমার জীবনের মোর ঘুরিয়ে দিয়েছে। ২০১৫-১৬ সেশনে ভর্তি পরীক্ষায় পাস করে মেধাক্রম অনুসারে ভর্তি হয় পালি অ্যান্ড বুদ্ধি স্টস্টাডিজ বিভাগ আর থাকার ব্যবস্থা হয় শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে। চার বছর অধয়্যন করে প্রথম বিভাগে স্নাতকে পাস করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকবৃন্দের মতো আমার বিভাগের শিক্ষকরা অনেক বন্ধুসুলভ ও মিশুক। আমার বন্ধুরাও অনেক ভালোও মিশুক প্রকৃতির।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক সামাজিক সংগঠনের মধ্যে আমি যোগদান করি বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেটকোর (বিএনসিসি)তে। বন্ধু সাইফুল আমাকে ভর্তি হতে সহযোগিতা করেছিল। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কন্টিন জেন্টের বিএনসিসি নৌ শাখায় । যা একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন। বিএনসিসি এর প্রতি আমার আগ্রহ বেড়ে যায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদ মিনারে সেচ্ছাসেবী হিসেবে দায়িত্ব পালন ও বাংলাদেশ নৌবাহিনী কর্তৃক একটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প করার পর থেকে । ধীরে ধীরে বিএনসিসিএর ক্যাডেটদের পাঁচটি পদবীর মধ্যে দক্ষতার সহিত উন্নীত হই।এরই মধ্যে চারটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প সম্পন্ন করি। চার নম্বর ক্যাম্পটি আমার জীবনের অন্যতম একটি অভিজ্ঞতামূলক ক্যাম্প কারণ এই ক্যম্পেই আমি সাভার সেনানিবাসের ফায়ারিং রেঞ্জে 7.62mm SA রাইফেল দিয়ে পাঁচ রাউন্ড গুলি ফায়ার করেছিলাম।
এরপর সততা, দক্ষতা ও যোগ্যতার সহিত আমি বিএনসিসি ক্যাডেটদের সর্বোচ্চ পদবী ক্যাডেট আন্ডার অফিসার পদে পদোন্নতি লাভ করি এবং পঞ্চম ক্যাম্পটি সম্পন্ন করি। সিইউও হওয়ার পর নৌ শাখার ১০০-১৫০ জন ক্যাডেটদের পরিচালনার ভার আমার উপর অর্পিত হয়। আমি প্রায় দেড় বছর আমার প্লাটুন কমান্ডার ও কন্টিন জেন্ট কমান্ডার স্যার এর নির্দেশ মতো এবং আমার জুনিয়র ক্যাডেট সহযোগিতায় সততা ও দক্ষতার সহিত দায়িত্ব পালন করি। এ সময় আমার অগ্রজ সিইউও সুরভী আপু, আমার বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক রুমানা পাপড়ি ও চেয়ারম্যান স্যারসহ অন্য শিক্ষকগণ সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণা দেয়।
সংগঠনটি আমাকেও আমার জীবনকে যেন পাল্টে দিয়েছে। এর মাধ্যমে আমি একটি অফিস কিভাবে পরিচালনা করা যায় তা জানতে পেরেছি আবার একটি অনুষ্ঠান কিভাবে আয়োজন করা যায় তার কৌশল ও নতুন পরিবেশে কিভাবে নিজেকে সহজেই মানিয়ে নিতে হয় সেটিও শিখেছি। এর মাধ্যমে সময় মতো সঠিক কাজ ও সঠিক সিদ্ধান্ত কিভাবে নিতে হয় তা জেনেছি । অর্থ্যাৎ একজন সৎ, দায়িত্ববান, নির্ভিক, সময়ানুবর্তী, সাহসী, শুদ্ধবাচনিক, সেচ্ছাসেবী মনোভাব মূলক দক্ষ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে বিএনসিসি অন্য রকম পথপ্রদর্শক সংগঠন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের উচিৎ এমন একটি সংগঠনে অবশ্যই যুক্ত হওয়া।
বিএনসিসি জীবনে কিছু সেচ্ছাসেবী দায়িত্বে অংশগ্রহণ করেছিলাম
- আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে (শহীদ মিনারে)
- জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর সমাধিতে
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে
- পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভা যাত্রার
- ২৫শে মার্চ কালো রাতে স্মৃতি চিরন্তন চত্তরে ও থার্টিফার্স্ট নাইটে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রবেশ দারে প্রক্ট্রিয়ল টিমের সাথে।
- বিভিন্ন বিভাগ ও হলের অ্যালামনাই সম্পর্কিত সংগঠনের অনুষ্ঠানে সেচ্ছাসেবক হিসেবে।
মো. অহেদুল ইসলাম, শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়