আজ থেকে শুরু ড্যাডিকে স্মরণ দুইদিন ব্যাপী স্মরণানুষ্ঠান

বাংলাদেশের ফটোগ্রাফির জনক, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আলোকচিত্রী ও প্রথম বাঙালি মুসলমান ছোট গল্পলেখক গোলাম কাসেম ড্যাডি। তাঁর ২৪তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে রিক্রিয়েশন ক্লাব ও ফটোফি একাডেমি অব ফাইন-আর্ট ফটোগ্রাফি ৯ ও ১০ জানুয়ারি দুইদিন ব্যাপী এক স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
আজ রোববার বিকেলে ৫টায় রাজধানীর শাহবাগের পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রে ‘ড্যাডিকে স্মরণ’ শীর্ষক শিরোনামের এক আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে থাকবেন ক্যাপ্টেন শফি, কবি সাখাওয়াত টিপু ও আলোকচিত্রী তাসলিমা আখতার।
আগামীকাল ১০ জানুয়ারি বিকেল ৫টায় মাহমুদা-হান্নান মেমোরিয়াল লাইব্রেরিতে (ঠিকানা: ৩৬ দিলু রোড, ঢাকা) ‘ড্যাডির শিল্পকর্ম ও সাহিত্য সাধনা’ শিরোনামে আলোকচিত্রী সাহাদাত পারভেজের একক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হবে। দুটি অনুষ্ঠানই পাঠক সমাবেশ ও ফটোফির পেইজ থেকে লাইভ করা হবে।

গোলাম কাসেম ড্যাডি ১৮৯৪ সালে সালের ৫ নভেম্বর অবিভক্ত ভারতের জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর হাত ধরে পূর্ব বাংলায় ফটোগ্রাফি শিক্ষাচর্চা শুরু হয়। তিনি ১৯১৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফ্যানট্রি কোরের সদস্য হিসেবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং মহাযুদ্ধের অসংখ্য দুর্লভ স্থিরচিত্র ধারণ করেন। ১৯৪৮ সালে রাজশাহীর ডিস্ট্রিক রেজিস্টার হিসেবে অবসরগ্রহণের পর ১৯৫১ সালে তিনি ঢাকার ৭৩ নম্বর ইন্দিরা রোডে ‘ট্রপিক্যাল ইনস্টিটিউট অব ফটোগ্রাফি’ ও ১৯৬২ সালে ‘ক্যামেরা রিক্রিয়েশন ক্লাব’ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ফটোগ্রাফিবিষয়ক একাধিক গ্রন্থের প্রণেতা।

বাংলা সাহিত্যে তাঁর ভূমিকা অপরিসীম। তাঁকে মুসলিম বাংলা সাহিত্যের শরত্চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় হিসেবে অভিহিত করা হতো। গল্পসাহিত্যে হিসেবে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ১৯৭৭ সালে নাসিরউদ্দীন স্বর্ণপদক পান। ১৯৮৮ সালে ‘ক্রিয়েটিভ ফটোগ্রাফার্স বাংলাদেশ’— এর আন্তর্জাতিক স্যালনে গোলাম কাসেম ড্যাডির নামে পদক প্রবর্তন করা হয়। ২০০৪ সালে তৃতীয় আন্তর্জাতিক ছবি মেলায় তাঁকে আজীবন সম্মাননা (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। এছাড়া তিনি ১৯৮৬ সালে সিনেসিক ও চট্টগ্রাম ফটোগ্রাফিক সোসাইটি পদক পান। তিনি বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটি এবং ইন্ডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ফটোগ্রাফিক কাইউন্সিলের সম্মানিত ফেলো। ২০২১ সালে পাঠক সমাবেশ থেকে প্রকাশিত হয় সাহাদাত পারভেজ সম্পাদিত তিনখণ্ডের ‘ড্যাডিসমগ্র’। ১৯৯৮ সালের ৯ জানুয়ারি ১০৪ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।