আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের ১৬১তম জন্মদিনে শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ

ভারতের কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের উদ্যোগে আজ পালিত হলো আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের ১৬১ তম জন্মদিন। কোভিড বিধিনিষেধ মেনে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। একেই দিনে উদযাপন করা হয় বিজ্ঞান দিবস।
আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের স্মরণে অনুষ্ঠানে তাঁর আবক্ষমূর্তীতে মাল্যদান করলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মানস কুমার সান্যাল, সহ উপাচার্য তথা বরিষ্ট অধ্যাপক গৌতম পাল। মাল্যদানের পর উপাচার্য এবং সহ উপাচার্য দুজনে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানের আরও উপস্থিত ছিলেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক অশোক প্রসূন চট্টোপাধ্যায়, সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায়, মিতালী সরকার, সুভাষ দেবনাথ, মনিন্দ্রনাথ বেরা, অষ্টম কুমার মহাপাত্র, বিভাগীয় প্রধান কুমারেশ ঘোষ ও অফিস সমন্বয়কারী ফারুক আহমেদ প্রমুখ।

কেবল বিজ্ঞানশিক্ষা নয়, সমগ্র বাঙালি জাতিকে বিজ্ঞান মনস্ক এবং বিজ্ঞান চেতনায় জাগরুক করে তোলা, তাঁর আজীবনের সাধনা দেশবাসীকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান শিক্ষা ও প্রসার ছিল তাঁর ব্রত। ব্যবসা বিমুখ বাঙালিকে সাবলম্বী উপার্জনে অনুপ্রাণিত করা ছিল তাঁর লক্ষ্য। এমন কথা বলেন উপস্থিত আলোচকবৃন্দ।
বক্তব্যরা আরও বলেন, রসায়ন তথা বিজ্ঞানসাধনায় তাঁর অবদান সর্বজনবিদিত। বাংলাভাষায় বিজ্ঞান চর্চাতেও আচার্যের অবদান অনস্বীকার্য। ‘Life and Experience of a Bengali Chemist” তাঁর আত্মচরিত। ইংরেজি ও বাংলায় রচিত বহু গ্রন্থ তাঁর সাহিত্য সাধনার পরিচয় বহন করে। তাঁর আত্মচরিত ইংরেজিতে লেখা হলেও বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং পাঁচ বছরের মধ্যে আত্মচরিতের বাংলা সংস্করণ প্রকাশিত হয়।

উল্লেখ্য, বাংলায় লেখা ‘বাঙালির মস্তিষ্ক ও তার অপব্যবহার এবং অন্নসমস্যায় বাঙালির পরাজয় ও তার প্রতিকার’ তাঁর অন্যতম প্রবন্ধ। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ “History of Hindu Chemistry” দুই খণ্ডে প্রকাশিত হয়। চরক, সুশ্রত, বাণভট্ট, বৃন্দ, চক্রপাণি কিংবা নাগার্জুন যে দীর্ঘ বর্ণনা দিয়েছেন সেই সব অজানা তথ্যকে প্রফুল্লচন্দ্র দুখণ্ডে প্রকাশ করেছিলেন। আর এটিই তাঁর দীর্ঘ গবেষণা সমৃদ্ধ রচনা।
ব্রিটিশরা চিরকালই ভারতীয়দের হেয় দৃষ্টিতে দেখেছে। কিন্তু সেই সময় প্রফুল্লচন্দ্র তাঁর মেধা ও গবেষণা দ্বারা প্রমাণ করেছিলেন, ভারতবাসীরাও পিছিয়ে থাকার নয়। শুধু তাই নয় রসায়ন শিক্ষার প্রসারে তার উদ্যোগী ভূমিকা স্মরণীয়। তিনি আজীবন দেশের মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন।
1 thought on “আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের ১৬১তম জন্মদিনে শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ”