নিজগ্রামে চিরশায়িত হলেন বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার অন্যতম সাক্ষী হাজী গোলাম মোর্শেদ

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার অন্যতম সাক্ষী হাজী গোলাম মোর্শেদ গত শনিবার রাত পৌনে ১টায় রাজধানীর হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। গতকাল রোববার সকালে তাঁর পৈত্রিক বাড়ি যশোরের বেনাপোল বাহাদুরপুরে চিরশায়িত করা হয়।
হাজী গোলাম মোর্শেদ ১৯৪৫ সালে থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথম দেখা হয়। পরের বছর ঢাকা এসে তিনি বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ ভাষণের দিন তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গাড়ি চালিয়ে রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) নিয়ে যান।

২৫ মার্চ রাতে জীবন বিপন্ন হওয়ার শঙ্কা উপেক্ষা করে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গী হয়েছিলেন তিনি। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার সাক্ষীদের মধ্যে এতদিন একমাত্র তিনিই জীবিত ছিলেন। ওই রাতে পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তিনিও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তিনি টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর কবর জিয়ারত করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন। সেসময় তিনি যশোর সদর মহকুমায় আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। সে সময় তাকে জানানো হয়, এ কবর জিয়ারত করা নিষিদ্ধ। টানা ২২ দিন তিনি জেল হাজত বাস করেছিলেন।
গোলাম মোর্শেদ ১৯৩০ সালের ১০ ডিসেম্বর যশোরের শার্শা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্ত্রী ও চার মেয়ে রেখে গেছেন। পাকিস্তান আমলে ছিলেন যশোর মহকুমা আওয়ামী লীগের নেতা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের সহযোগী (অবৈতনিক) হিসেবে কাজ করেন। বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নিলে গোলাম মোর্শেদের চাকরির অবসান হয়। ৩০ বছর ধরে ঢাকার মোহাম্মদপুরের আসাদগেট এলাকার বাড়িতে থাকতেন।