রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্য পুরস্কার ২০২১ এর আবেদন করতে পারবেন ১ জুন পর্যন্ত

২০২০ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্য পুরস্কার ও ঠাকুর পুরস্কারপ্রাপ্ত তিনজন।
ভারতীয় সাহিত্যের জন্য রবীন্দ্রচর্চা, সৃজনশীল ও শৈল্পিক লেখা আর্ন্তজাতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য চালু হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্য পুরস্কার। এই সঙ্গে জাতীয় ও আর্ন্তজাতিকভাবে সংস্কৃতি,ইতিহাস-ঐহিত্য, শিক্ষা, মানবাধিকারের উপর কোন ভারতীয় ভাষা বা উপভাষায় ভারতে বা বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয় দ্বারা রচিত এবং ইংরাজী ভাষায় অনূদিত গ্রন্থের জন্য প্রসারে অবদান রাখার ক্ষেত্রে দেওয়া হয় ঠাকুর পুরস্কার। ২০১৮ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্য পুরস্কার কমিটি ও অলাভজনক মার্কিন প্রকাশনা সংস্থা ‘মৈত্রেয় পাবলিশিং ফাউন্ডেশন’ (এম.পি.এফ) এই পুরস্কার প্রদান করে আসছে।।
প্রতিবছর এই পুরস্কারের জন্য আহ্বান করা হয়। সেই আবেদন জমার পর একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্য পুরস্কার কমিটি। ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সর্বস্তরের স্বাস্থ্য সচেতনতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্য পুরস্কার ২০২০ স্থগিত রাখা হয়েছিল। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ এবং প্রেস রিলিজের মাধ্যমে বিজয়ী ঘোষণা এবং পুরস্কার প্রদান করা হয়।
কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতির মন্দাবস্থার কথা বিবেচনা করে প্রথম পুরস্কার মূল্য ১০,০০০ মার্কিন ডলার থেকে সাময়িক হ্রাস পেয়ে ৫,০০০ মার্কিন ডলার করা হয় এবং ১০০০ ডলার মাসিক কিস্তিতে তা পরিশোধ করা হবে। অর্থপ্রদান, সনদ ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি ভার্স্কয দ্বারা বিজয়ীকে ভূষিত করা হয়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্য পুরস্কারের প্রতিষ্ঠাতা ও পুরস্কার প্রদান কমিটির সভাপতি পিটার বুন্দালো বলেন, ‘ ২০২০ বছরটি পুরো বিশ্বের কাছে বিভিন্নভাবে চ্যালেঞ্জিং ছিল। মানবতার চেতনা, সহানুভূতি ও সহমর্মিতা আমাদেরকে নতুন বছরের জন্য প্রস্তুত করবে এবং আমরা সবাই পরবর্তী অনুষ্ঠানে একত্রে মিলিত হব। ততক্ষণে সবাই নিরাপদে থাকব কোভিড-১৯ হতে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উত্তরাধিকার হিসেবে, সাহিত্য পুরস্কার অর্জনের মধ্য দিয়ে ভারতীয় সাহিত্যে অবদান রাখতে পারছি এবং সামাজিক অবদানের মধ্য দিয়ে সমাজের উপর ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারছি ।’
২০২০ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হয় রাজ কামাল ঝাকে। তিনি দ্য সিটি অ্যান্ড দ্য সি উপন্যাসের জন্য এই পুরস্কার অর্জন করেন। সামাজিক অবদানের জন্য দুইজন বিশিষ্ট ব্যক্তিতে ঠাকুর পুরস্কার প্রদান করা হয়। ওমানের প্রয়াত সুলতান ও দ্য পিপলস অব ওমানের সুলতান কাবুস বিন সাইদ আল সাইদ এবং ভারতের খ্যাতিমান নৃত্যশিল্পী কোরিওগ্রাফার সন্দ্বীপ সোপারকার।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্য পুরস্কার ২০২০ প্রাপ্ত রাজ কমল ঝা এর দ্য সিটি অ্যান্ড দ্য সী উপন্যাসটি যৌন নিপীড়ন ও নৃশংস হত্যা মামলার উপর ভিত্তি করে লেখা।
সুলতান কাবুস বিন সাইদ আল সাইদকে মরণোত্তর পুরস্কার প্রদান করা হয় তাঁর আজীবন শান্তি স্থাপন ও সমৃদ্ধি প্রচেষ্টার জন্য। একজন শান্তির নির্মাতা কখনো মারা যায় না, তিনি চিরকাল মানুষের হৃদয়ে বাস করে এবং সকলকে আলোকিত পথের সন্ধান দেয়৷ সুলতানের উত্তরাধিকারী মহামান্য হাইথাম বিন তারিক আল সাইদ সুলতানের পক্ষে পুরস্কারটি গ্রহণ করেন।
ভারতের প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী কোরিওগ্রাফার সন্দ্বীপ সোপারকারকে তাঁর উদ্যোগ Dance for a Cause এর মাধ্যমে সমাজের উন্নতিতে অবদান রাখার জন্য এ পুরস্কারে নির্বাচিত করা হয়েছে। যা সমাজের মানুষকে পারস্পরিক মূল্যবোধ, সহিংসতা, এসিড নিক্ষেপ, মাদকের অপব্যবহার, এইডস ও ক্যান্সারের যত্ন, বয়োজ্যেষ্ঠদের সেবাদান প্রভৃতি বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে যুব সমাজকে ইতিবাচক কাজ ও দৃষ্টিভঙ্গিতে উদ্ধুদ্ধ করেছে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পুরস্কারের উপদেষ্টা এবং যুক্তরাষ্ট্রের হলিউডের সদস্য স্যান্ড্রা ডি কাস্ত্রো বাফিংটন মনে করেন, বিশ্ব সাহিত্য ও শিল্পকে স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্য পুরস্কারে যুক্ত হওয়া একটি সম্মানজনক বিষয়’।
উল্লেখ্য, ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম ইয়োহে সাসাকাওয়া কুষ্ঠরোগ নির্মূল করার প্রচেষ্টা ও বিশ্ব-শান্তিতে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে রাণা দাশগুপ্তকে তাঁর “সোলো” বা ‘একক’ উপন্যাসের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্য পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্য পুরস্কার ২০২১ এর আবেদন করতে পারবেন ২০২১ সালের১ জুন। লিংকের ক্লিক করে পেয়ে যাবেন।