ব্যক্তিগতভাবে গড়ে ওঠে পরীগঞ্জের মোখলেসুর রহমান মাস্টার স্মৃতি পাঠাগার

মহাত্মা গান্ধী বলেছেন ‘ব্যক্তির দেহ, মন ও আত্মার সুষম বিকাশের প্রয়াস হলো শিক্ষা’।আর এই শিক্ষার বিকাশে পৃথিবীতে যুগ যুগ ধরেই গড়ে উঠেছে বিদ্যালয়,মহাবিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় ও পাঠাগার। প্রমথ চৌধুরী বলেছেন, ‘লাইব্রেরির সার্থকতা হাসপাতালের চাইতে কিছু কম নয় এবং স্কুল-কলেজের চাইতে একটু বেশি।’
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষার বিকাশে জন্য মানুষ সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবেও গড়ে তুলছে ছোট বড় নানা রকমের পাঠাগার। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। এখানেও গড়ে ওঠেছে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নানা রকমের পাঠাগার। তেমনি বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের নতুন একটি ব্যক্তিগত পাঠাগার গড়ে ওঠেছে। সেই সম্পর্কে জেনে নিই—
মোখলেসুর রহমান মাস্টার স্মৃতি পাঠাগার
উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। এই জেলার ছোট্ট উপজেলা পীরগঞ্জ। পীরগঞ্জ হতে কয়েক কিলোমিটার দূরে ফুটানি টাউনে বাজারের পাশে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট রুমকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে মোখলেসুর রহমান মাস্টার স্মৃতি পাঠাগার।এই পাঠাগারের এক রুমে রয়েছে বই রাখার ব্যবস্থা ও অপর রুমে রয়েছে বই পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। মোখলেসুর রহমান পীরগঞ্জের নারায়নপুর দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক ছিলেন।তার ইংরেজির দক্ষতা ও মানুষকে পড়াশোনার ব্যাপারে সাহায্য সহযোগিতার করার কারণে বেশ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। বিশেষ করে গরিব-দুঃখী ছাত্রদের টিউশন ফি মওকুফ ও স্কুলের বেতন মওকুফ করে দেওয়া ক্ষেত্রে বেশ খ্যাতি ছিল তার। ২০০৯ সালে ২৩ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যুর পর তার স্মৃতিতে দীর্ঘ পরিকল্পনায় তার ছেলে মো. মেহেদী হাসান ডরিন ও অধৃষ্য ক্লাবের সহযোগিতায় ২০১৯ সালে ৭ এপ্রিল দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট রুম নিয়ে গড়ে তুলেন মোখলেসুর রহমান মাস্টার স্মৃতি পাঠাগার।

প্রথম দিকে ১০০-১৫০ বই নিয়ে খুব স্বল্প পরিসরে পাঠাগারটি শুরু হলেও বর্তমানে এই পাঠাগারে বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৫০০। আলোকবর্তিকা নামক একটি সাহিত্য পত্রিকা নিয়েও কাজ করে এই পাঠাগারটি। অনেকেই নিজের মত করে এই পাঠাগারে বই দিয়ে সাহায্য করেন থাকেন। প্রায় প্রতিদিনই এই পাঠাগারে বই পড়তে আসেন বই প্রেমিকরা।
মানুষের অগ্রগতিতে পাঠাগার এক আলোক দিশারী। তাই যুগের পর যুগ পেরিয়ে মানুষ এগিয়ে চলেছে আরো এক আলোকিত সভ্যতার দিকে। তাই হয়তো জন ব্রাইট বলেছেন “লাইব্রেরিই মানুষকে অন্ধকার হতে আলোর পথে ভ্রমন করাতে পারে”।