চলে গেলেন কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমার

আজ বুধবার সকাল সাড়ে সাতটায় ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের মুম্বাইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালে চলে গেলেন বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমার। মৃত্যুকাল বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, শ্বাসকষ্টজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন দিলীপ কুমার। এ জন্য গত ৩০ জুন তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। হিন্দুজা হাসপাতালের চিকিৎসক জলিল পারকার দিলীপ কুমারের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, দিলীপ কুমারের চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত ছিলেন জলিল পারকার। এ ছাড়া দিলীপ কুমারের অফিশিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকেও তাঁর মৃত্যুর খবরটি জানানো হয়েছে।

দিলীপ কুমারের আসল নাম মহম্মদ ইউসুফ খান। ১৯২২ সালের ১১ ডিসেম্বর বর্তমান পাকিস্তানের পেশোয়ারে তাঁর জন্ম। তাঁর পিতা লালা গোলাম সারওয়ার একজন ফলের ব্যবসায়ী ছিলেন যিনি (মহারাষ্ট্র, ভারত) পেশোয়ার ও দেওলালীর মধ্যে ফলের বাগানের মালিক। তাঁর মাতার নাম আয়েশা বেগম। বার্নস স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শুরু করেন। ১৯৪০ সালে দিলীপ কুমার পুনে বাড়ি ছাড়েন যেখানে তিনি একজন ক্যান্টিন মালিক এবং একজন শুষ্ক ফল সরবরাহকারী হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৪৩ সালে, “বম্বে টকিজ” এর মালিকানাধীন অভিনেত্রী দেবিকা রানী ও তার স্বামী হিমাংশু রাই পুনের অন্ধ সামরিক ক্যান্টিনে দিলীপ কুমারের সাথে সমঝোতার প্রচেষ্টা করেন।

১৯৪৪ সালের “জোয়ার ভাটা” চলচ্চিত্রটির জন্য দিলীপকে প্রধান চরিত্রে অন্তর্ভুক্ত করেন এবং এই চলচ্চিত্রটিতে অভিনয়ের মাধ্যমে বলিউডে শিল্পে প্রবেশ করেন। তার প্রকৃত নাম মুহাম্মদ ইউসুফ খান হলেও হিন্দি লেখক ভগবতি চরণ বর্মা তাকে স্ক্রীননেম দিলীপ কুমার দেন। এটা বিশ্বাস করা হয় যে দিলীপ কুমার বিভিন্ন ভাষায় কথা বলতে পারেন; যেমন: ইংরেজি, হিন্দি, উর্দু এবং পুশতু ভাষা।

৬০টিরও বেশি বলিউড ছবিতে তিনি অভিনয় করেন।১৯৭৬ সালে দিলীপ কুমার ছবিতে অভিনয় থেকে পাঁচ বছর বিরতি নেন এবং ছায়াছবি ক্রান্তি প্রধান চরিত্রে অভিয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে নিয়মিত হন এবং প্রধান চরিত্রে নিয়মিত অভিনয় চালিয়ে যান। উল্লেখযোগ্য ‘জোয়ার ভাটা’, ‘আন’, ‘আজাদ’, ‘দেবদাস’, ‘আন্দাজ’, ‘মুঘল–ই–আজম’, ‘গঙ্গা–যমুনা’, ‘ক্রান্তি’, ‘কর্মা’, ‘শক্তি’, ‘সওদাগর’, ‘মশাল’।

‘সাগিনা মাহাতো’তে কালজয়ী এ ছবিতে তাঁর নায়িকা ছিলেন সায়রা বানু। আটবার তিনি সেরা অভিনেতা হিসেবে ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কার জয় করেছেন। হিন্দি সিনেমাজগতের সবচেয়ে বড় সম্মান ‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কারেও তাঁকে সম্মানিত করা হয়। ২০১৫ সালে সরকার দিলীপ কুমারকে দেশের দ্বিতীয় বড় সম্মান ‘পদ্মভূষণ’-এ সম্মানিত করে।সমালোচকরা হিন্দি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে তাকে প্রশংসিত করেন। একটি ব্লগ পোস্টে অমিতাভ বচ্চন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে দিলীপ কুমারকে বেছে নিয়ে বিবৃতি প্রদান করেন।