গ্রামের নাম একান্নবিঘা

আমার গ্রামের নাম একান্নবিঘা। ছোট্ট একটি গ্রাম। রাজশাহীর নাটোরের থেকে প্রায় ৩২ কি.মি. উত্তর-পূর্ব দিকে। বলতে পারেন গ্রামটি নামটি এমন কেন? হ্যাঁ, প্রচলিত কথা অনুযায়ী এই গ্রাম একান্ন বিঘা জমি জুড়ে বাজারের অবস্থিত বলে নামকরণটি এমন করা হয়েছে। শুধু একটি নাম নয় একজন মানুষের যেমন অনেক সময় ডাক নাম ও সার্টিফিকেট নাম আলাদা হয়ে থাকে, এই গ্রামটিরও তেমন। একান্নবিঘা চলনবিলের খুবই কাছাকাছি অবস্থিত ও বিলের বড় একটি দহর পড়েছে এই গ্রামের গুরনাই নদীতে। তাই গ্রামটি সবার কাছে ” বিলদহর” নামে পরিচিত। আত্রাই নদীর শাখানদী গুরনাই বিলদহরের বুকের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চলেছে যুগ যুগ ধরে।

নদীর কুল জুড়েই খুবই নিকটে বিলদহর বাজার। রয়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি উচ্চবিদ্যালয়, বিদ্যালয় সংলগ্ন বড় একটি খেলার মাঠ। এছাড়াও কারিগরি শিক্ষার জন্য একটি বিদ্যালয়, বাজারের পুরোনো একটি মসজিদ ও একটি মন্দির। অসাম্প্রদায়িকতার মিলবন্ধনে বহু বছর ধরে এক সঙ্গে সব ধর্মের মানুষ এক সঙ্গে জীবনযাপন করে চলেছে।

মোটামুটি যোগাযোগ ব্যবস্থা, স্বাভাবিক জীবন ধারণে মিলেমিশে সবাই বেশ সুখি ও সাচ্ছন্দ্যে দিন কাটিয়ে যাচ্ছেন। মাছের জন্য অনেক যুগ ধরেই বিখ্যাত।
চলনবিলের কাছেই গুরনাই নদী। এই নদীর ধারে অবস্থান বলে বিলের নদীর অসংখ্য মাছ পাওয়া যায় বিলদহরের মাছ বাজারে। এছাড়াও এলাকাটিতে অসংখ্য পুকুরও রয়েছে। বিলদহরের পশ্চিম দিকে বসবাস করে মৎস্যজীবীরা, মাছ ধরেই যাদের সারাবছর জীবীকা নির্বাহ করতে হয়৷ এই পাড়াটি মৎসজীবীপাড়া হিসেবেই পরিচিত।

চলনবিলের রয়েছে একটি মাজার। নাম ‘ ঘাসি পীরের মাজার ‘। তা যুগ যুগ ধরে সমাদৃত। ঘাসি দেওয়ান নামের একজন পীর সাহেবের কবর রয়েছে এখানে। তাঁরই নামে মাজারটি এই এলাকার সব ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছের কাছে শ্রদ্ধেয়। প্রতি বছর চৈত্র মাসে বিলের পানি যখন শুকিয়ে যায় এই মাজারে বসে মেলা। ‘ তিসিখালীর মেলা ‘ বলে প্রচলিত। মেলা চলে দুইদিন ব্যাপী এবং পরের দিন এই মেলাই এসে বসে বিলদহরে। এখানেও দুইদিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়। মেলার দ্বিতীয় দিনকে অবশ্য ধরা হয় বৌ মেলা হিসেবে। কেননা গ্রামের সব বাড়ির বৌ-ঝি রা মিলে এই মেলা হয় সরগরম।
অর্চনা রাণী সাহা : উদ্যোক্তা ও শিক্ষার্থী, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি







আপনি আপনার প্রিয় গ্রামকে নিয়ে আমাদের কাছে লিখুন।সঙ্গে পাঠাবেন একাধিক ছবি, আপনার পরিচতি। বিষয় : ‘আমার প্রিয় গ্রাম’। আপনার গ্রামের যা যা আছে, আপনার ভালো লাগা, বেড়ে ওঠা, স্বপ্ন— এই সব নিয়ে চটজলদি লিখে আমাদের ইমেইল করুন। ইমেইল : boicharita@gmail.com
একান্ন বিঘার পাশেই রয়েছে মহিষ মারি দাখিল মাদ্রাসা