জিনাত নাজিয়া’র দুটি কবিতা

ঘূণপোকা
ঘূণপোকার আক্রমণে
দিন দিন ক্ষয়ে যাচ্ছিল
হৃৎপিণ্ডের অলিগলি,
চক্ষু,কর্ণ, নাসিকা।
চারদিকে ভয়ংকর
ভাইরাস করোনা।
গৃহবন্দী হাসপাস মুহূর্তগুলো,
এলোমেলো নিঃশব্দ পথচলা।
পরিবারকে প্যারা হীন রাখার
অক্লান্ত সীমাহীন নীরবতা,
অবাক করে দেয় আমাকে।
যারা জীবন দিয়ে ভালোবাসে,
তাদের সুন্দর মুখচ্ছবিগুলো
আস্তে-ধীরে ডুবিয়ে দিব
অন্ধকার গহীনের অতল সীমানায়।
কোন অধিকারে?
না, মুহুর্তেই সচেতন হলাম।
শুরু হলো আর এক অধ্যায়।
ডাক্তার, ইসিজি, এনজিও গ্রাম…
মায় ওপেনহার্ট,এভারকেয়ার হাসপাতালের করিডোরে
নির্ভিক উঠানামা।
এই হাসপাতালেরই নামকরা
একজন সার্জন জুলফিকুর হায়দারের তত্বাবধানে চলল,
আটজন ডাক্তারের হৃদয় নিয়ে কাটাকুটির অভিজ্ঞ লড়াইয়ের
সফল ক্যারিমা।
অপারেশনের আগে সতেরো
নাম্বার সাইন করতে গিয়ে
আমার পাশের মানুষটি মহান
আল্লাহর দরবারে নিজের
জীবনের বিনিময়ে আমাকে
ফেরত চাইল।
কৃতজ্ঞচিত্বে মহান আল্লাহকে স্মরণ করলাম। মরহুম মা-বাবা
ও স্মৃতিতে ভেসে এলো।
সেই সাথে পরিবার, সন্তান,
এবং ডাক্তারদের। ঘূণপোকায়
খাওয়া হৃদয়টাকে নতুন
করে আবিষ্কার করলাম।
ফিরে পেলাম নতুন এক জীবন,
নুতন এক পৃথিবী।
জীবন মৃত্যু
পাতারা ঝড়ে যায়,
স্মৃতিরা স্পর্শ কাতর।
উচ্ছ্বাস জন্মোৎসব থমকে
দাঁড়ায় মৃত্যুর দুয়ারে,
দিন গুণে মাস বছর।
মাঝে কত মান অভিমান
ভালো-বাসাবাসি,
ছন্দ পতন।
নূহ্য দেহে থিরথির কাঁপে
হাতের লেখনী এলোমেলো
শব্দ চয়ন।
তবু্ও হৃদয়ের হার্ডডিস্কে
ভীড় করে কত শত
গল্প কবিতা।
ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে
যাবে, স্মৃতি ঘেড়া
সব স্বপ্ন কথা।
হয়তো বা কেউ
ভালোবেসে খুঁজে যাবে
তারাদের ভীড়ে।
শ্বাশত আমি গলে
পঁচে স্থায়ী হব
মাটির গভীরে।
জিনাত নাজিয়া, বসুন্ধরা আবাসিক এরিয়া, ঢাকা।