হাবিবা বেগম’র কবিতা

শরতের ক্যানভাস
শরতের মেঘ ধরে নানা ভেক
এই এক্ষুনি ছুটে আকাশের পিছুপিছু
ঝুলিয়ে কালো মুখ ঝমঝম বৃষ্টি
ভিজে যায় বুকের বসন উপচে পড়েছে দিঘি
এই এক্ষুনি কড়া রোদ্দুর শুকিয়ে যায় জমিন
আবার মন্থর বাতাসে দুলে কাশবন
বাহারি রঙের ফুলগুলো শরীর ঝাকিয়ে
আকাশের আয়নায় ঝিকিমিকি
আকাশপটে মেঘের আনাগোনা
যেন ক্যানভাসে আঁকা চিত্রকরের ছবি
উদাস হৃদয় মেলছে ডানা
শিল্পীর ক্যানভাসে
আঁকছে ছবি তুলিকা ছাড়া রঙে ঢঙে।
ভাদ্রের উছল যৌবন
ভরেছে ভাদরে নদীনালা দিঘি আর উছল যৌবন
পদ্ম বিছিয়েছে তার রঙিন চাদর
রাত্রি শেষে কেতকীরা শোনে রোজ শিউলির নীরব ক্রন্দন
বেলির সুবাসে বাহারি জবার নাসিকারা দোলে
প্রজাপতি মেলেছে শরীর মালতির গায়
তালপাতার বাঁশির সুরে
ভাসছে কেয়াপাতার নৌকা যমুনার জলে
পূবালী পবনে ভেসে যায় রজনীগন্ধার ঘ্রাণ
নক্ষত্র ভরা ভাদ্রের রাত্রি জড়িয়ে শরীরজুড়ে।
শরতে শিশিরবিন্দু
আকাশের বক্ষমাঝে শরতের মেঘ
দু’চোখে এঁকেছে দেখি ছলনা-কাজল
এই কালো এই সাদা
করছে একাকি খেলা সারাবেলা
ভিজিয়ে দিয়েছে আজ উজ্জ্বল রোদের তপ্ত বুক।
মান-অভিমান জমে জমে যখন পাহাড় নামে
ঘুঘুর দুপায়ে ঝুমঝুম শব্দে কাশবনে
শীতল জলের স্নান করিয়ে দেয়ার পরে
খিলখিলিয়ে ওঠে কাশবন
সবুজ সতেজ ধানে মাখামাখি রঙে ঢঙে
বাজায় বিদায় বাণী
বক-পালকের মতো দেয় উঁকি কাশফুল
কাশের ফুলের মাঝে
কষ্টরা তুমুল বাজে বুকে
নেই তুমি পাশে আছে শুধু শিশিরবিন্দু।