বাসব রায়’র কবিতা

আসুক ফিরে
অবাঞ্ছিত সময় ফুরোতেই চায় না
উদ্বাহু আমরা যেন অনন্তকালের পরিক্রমণ
যা শেষ হওয়ার নয়—
সরিসৃপ দুঃস্বপ্ন অক্টোপাসে বেঁধেছে মহাকালকে
আর্তনাদের পাথারে স্রোতহীন ভেলা অস্তাচলের পথ চেয়ে—
তবুও হারানো গান আসুক ফিরে
আসুক চঞ্চল মধ্যাহ্ন , যৌবন বিকেল
কামনার গোধূলি, ফুলশয্যার রাত আরেকবার ৷
দারুণ কারিগরী
হলদে পাখিটা বসন্তশাখায় বসে ঝিম ধরে থাকে ; রাজ্যের ভাবনা ওর—
ছিটেফোঁটা কালচে আর খয়েরি রঙ-এ ভীষণ আদুরে সে—
চেয়ে দেখি ছোট্ট সৃষ্টির কী দারুণ কারিগরি!
জয় হয়েছে মহাকাশ আর পাতাল
আত্মপ্রত্যয়ী আনন্দের ভাগীদার পৃথিবী
পাখিটি কিছুই বোঝে না সেসবের—
একদিন পাখিটি হারিয়ে যায়
হয়তো অভিমান অথবা খাদ্যের সন্ধান—
সব আনন্দ তেমনই আছে
শুধু পাখিটিকে দেখি না আর৷
ফারাক নেই
প্রেয়সীর চোখে নিজেকে দেখেছি
আয়নার দরকার পড়ে না আর
নিখাদ প্রেমসন্ধ্যায় জোনাকির অভিসার
আলো আর আঁধারির অপূর্ব রসায়ন ৷
শরীর বেয়ে বৃষ্টি নামে সুখের ছোঁয়ায়
সূর্য মুখ লুকোয়—
আমাদের দিনরাত্রির কোন ফারাক নেই ৷
আনন্দআশ্রম
ভিন্ন এক সরগম
নীরস রক্তেও আবেশ ছড়ায়
সুরের খেলায় আন্দোলিত হয় ভিতর বাহির
অবসন্ন মেঘেরাও শ্রাবণী হয়ে নামে
অচেনা সুখের বাতাস কাছাকাছি কোথাও
উধাও অন্তরে খেয়ালি বাঁশি বেজে ওঠে
আলাপে আলাপে মোহিত হয় চারপাশ
গড়ে ওঠে এক কাঙ্ক্ষিত আনন্দআশ্রম—৷
সৌন্দর্যের ভোর
একটা সকাল দেখব বলেই নির্ঘুম রাত কাটাই, একটা অনিন্দ্যসুন্দর ভোরের অপেক্ষা যে আজন্মের –
কবিতার পাতায় অবিন্যস্ত প্রহর
সপ্তর্ষির অনিমিখ চেয়ে থাকা
ছায়াপথের বিস্তীর্ণ পথে অশরীরী কাব্য –
বিস্মিত সূর্যোদয়ের রক্তিম পূর্বাশা
সব ফেলে জানালায় আড়ষ্ট চোখ নিবন্ধ হয়
মনে হয়, এ সৌন্দর্যের ভোর শুধুই আমার -৷
বাসব রায়, রাজবাটি , দিনাজপুর
বইচারিতা কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই