অরণ্য আপনের কবিতাগুচ্ছ

এমন একদিন আসবে
এমন একদিন আসবে
তোমার জন্য চোখের অশ্রু আর রবে না
তোমার জন্য সকালটা আর দাঁড়াবে না
এমন একদিন আসবে
আকাশটাকে মনে হবে খেড়ির চাল
প্রেমিক হলে মনে হবে প্রেমিকার গাল
নদীটাকে মনে হবে হারানো চোখ
পাশে শুয়ে থাকা লোকটাকে মনে হবে দোজখ
এমন একদিন আসবে
বুকের ব্যথাগুলি তোমার দেওয়া আর মনে হবে না
চোখের অশ্রুগুলি তোমার নাম বলবে না
এমন একদিন আসবে
চশমা আর তোমার চোখের শক্তি ফিরিয়ে আনতে পারবে না
অভিমানে ঢাকা প্রেমের অক্ষরগুলি আর পড়তে পারবে না
এমন একদিন আসবে
তোমার পা আর তোমাকে থামাতে পারবে না
তুমি ঠিক চলে আসবে
কিন্তু আমাকে পাবে না
এমন একদিন আসবে
কবিতা আর আসবে না
তোমার বাড়ির সামনে সাইকেলের বেলটা আর বাজবে না
এমন একদিন আসবে
মরতেও পারবে না
বাঁচতেও পারবে না
তন্বী
তোমার দরজায় আমার হাত আটকে গেছে
আমি আর কাউকে ডাকতে পারি না
খোদাকেও না
একটু বিছানা থেকে উঠে আস না!
তোমার মনের দরজা ছাড়া আমার মুখের সমস্ত দরজা বন্ধ
তুমি খুলে দাও না!
শুক্রবার একটা স্বপ্ন দেখেছি যে তুমি আমার কাছে দরজা খুলে ফিরে এসেছ
হ্যাঁ, এটা তো স্বপ্নই ছিল
কিন্তু স্বপ্ন বিশ্বাস করার আমি কে?
আমি দুঃখকেই প্রভু বানিয়ে নিয়েছি
এত দুঃখ যে
আমি জানি না কোন দুঃখে আর কোন কষ্টে আমি কাঁদব
তা-ই হাসতে থাকি
হাসতে হাসতে আমি এই জমিন আর আসমানকে এক করে ফেলি
এত দুঃখ যে
আমি দুঃখকেই প্রভু বানিয়ে নিয়েছি
তারা অবহেলা করেছে
আমি অবহেলাকেই করেছি জীবন চলার পাথেয়
আমার প্রভু প্রেম চায়, কবিতা চায়
স্বর্গের গ্রাহক চায় না
তুমি স্বর্গের লোভ দেখায়ো না
আমাকে ঘেন্না করেছে
আমি ভালোবাসা পাবার জন্য ঘেন্নাকেই কবুল করেছি
আমি মাথা ঠান্ডা রেখেছি
যখন তারা মাথা গরম করে আমাকে দোষারোপ করেছে
চোখের চেয়ে হৃদয় যখন বেশি দেখে
হৃদয়কেই তারা অন্ধ করে রেখেছে
আমি তো নিজের ছায়ায় অন্ধকার হওয়া মানুষ
আমি চোখ অন্ধ করেছি যাতে হৃদয় দিয়ে বেশি দেখতে পারি
তারা আমার হৃদয়ের বসন্তকে বিরক্ত করে গেছে
পথটা আমার ছিল না
কিন্তু আমি নিজেকে পেয়ে হেঁটে গেছি
আমি তো নিজেকে হারানো মানুষ
এত দুঃখ যে
আমি জানি না কোন দুঃখে আর কষ্টে আমি কাঁদব
তা-ই হাসতে থাকি
হাসতে হাসতে আমি এই আসমান আর জমিনকে এক করে ফেলি
আমি ভালোবেসে দেখেছি
তাদের জিহবা মসজিদ আর হৃদয় ইহুদি মন্দির
এত দুঃখ যে
আমি দুঃখকেই প্রভু বানিয়ে নিয়েছি
চোখ থেকে জল পালিয়ে গেছে আর দুঃখ থেকে গেছে মায়ের মতো