গোলাম রসুলের কবিতাগুচ্ছ

হাত
আমি হাত খুললাম আর দরজা খুলে গেল
ভেতর থেকে পর্দা টানা মহাকাল আমি দেখলাম হোমার বই পড়ছে
জমানো পাখনায় উড়ে যাচ্ছিলাম
মাঠ নদী আর বন সমূহ
আমরা পরস্পর এক সঙ্গে উড়ছিলাম
উপরের ধূসর স্রোত
আর নৌকা হারানো দাঁড়ের মতো
খুব সহজেই অনুমান করে নিতে পারি এখনো
কেউ রোমান্টিকের মতো পৃথিবীকে এঁকে যাচ্ছে
আকাশের পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা
মৃত্যুর সরঞ্জাম আর সোনালী ধ্বংস
সমুদ্রের ধারে লবণের উজ্জ্বল আলো চিৎকার করে বলছে বাঁচাও
কানে পৌঁছনোর আগেই খসে খসে পড়ে যাচ্ছে যে সব শুকনো ধ্বনি
দুঃখ বোধের গৌরব নিয়ে কিভাবে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম আধখানা চাঁদের মাথায়
রাত শেষ হয় আমাদের অস্তিত্বের মতো
আমাদের হাতের প্রতিধ্বনি হয়
আর অজস্র হাতে ঠেলে নিয়ে যাই আকাশ
শেষ নিরবতা
শেষ নিরবতা
এখানে কোনো ধাতুরও শব্দ নেই
কোনো এক কান্না পর্যন্ত পৌঁছে গিয়ে ফিরে এলো আমাদের ছেঁড়া দুটি কান
শিকারী পাখিরা আকাশের দেয়াল ঘেঁষে চাপা দিচ্ছে আমাদের সদ্য দেওয়া কবরগুলোকে
যেগুলো কয়লার তলায় অশ্রুর মতো সমুজ্জ্বল
জনহীন দোকানে নক্ষত্রের আলো
সৌন্দর্যের কোঠাবাড়ি
ফিটফাট গম্বুজ গুলো আমাদের ওপর নজর রাখছে
শোক প্রকাশ
আমি আমার দেশের বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম
যে মহাবিশ্বের পথ দিয়ে মেঘেরা হেঁটে গেছে
তাদের শোক প্রকাশ আমাকে আরও আপ্লুত করেছে
নদীর ওপর দিয়ে আমি যখন যাচ্ছিলাম ধরে রাখতে পারি নি আমার কান্না
পাহাড়ের শিরাগুলো ফুলে উঠছে
আমি ঝুলে আছি একটি শক্তিশালী পাখির ডানায় স্প্রিংয়ের মতো
দুঃসাহসিক এই অভিযান যা হয়তো জীবন
কোণাকুণি আকাশ
মুখোমুখি দুই পৃথিবী
ভয়ানক আয়না
মেঘ তাড়াহুড়ো করে চলে গেল
যা ছিল একটা আয়াতের মতো আমি পড়তে পারিনি
সে বধির ছিল
আর বিপথগামী করে দিয়েছিল বিদ্যুৎকে
লেন্সের ভিতর দিয়ে সূর্য অস্ত যাচ্ছে
আর চাঁদের প্রজাসাধারণ এগিয়ে আসছে
শুকনো নদীর কূপ
সিঞ্চন করছিল হাত তার বালিগুলো ঝরে পড়ছিল
যে প্রতিফলনে আকাশ
আর পৃথিবী ভয়ানক একটি আয়না
আমার হাওয়া আমি গুছিয়ে নিয়েছি
যে ডানায় আমি ঝুলে
তাও আমি জানি মানুষের মেঘ
নৈঃশব্দের বন
আমাদের কোনো দুঃখ ছিল না
তাও চাঁদ উঠছে
আর আমরা উপরে উঠে যাচ্ছি
অন্ত্যজ আকাশ অনেকটা নিচু হয়ে
মাঠের সামন্ততান্ত্রিক জাঙালের ওপরে
সম্রাটের অন্ধকার
উপত্যকায় ঈগলের ঝাড়বাতি ধাক্কা মারছে প্রহরের গায়
প্রতিবেশী হাওয়ার ঢল
আমি দেখছিলাম মানুষের ব্যথার মতো নরম পায়ে যারা হাঁটছে বরফের কাদায়
ক্ষুধার্ত মেঘ
নৈঃশব্দের বন
আমরা একটি মরুভূমিকে বানান করছিলাম
যদিও প্রতিরক্ষার জন্য আমাদের কবরগুলোর ওপর
ঢাকনা ছিল।
গোলাম রসুল : কবি, ভারত
অসাধারণ বললেও কম বলা হবে। দুরন্ত কলম দাদা। বর্তমানে তুমি আমার কাছে শ্রেষ্ঠ কবি ❤️
শুভ কামনা করি প্রতিনিয়ত ❤️?❤️
আপনার কবিতা যত পড়ি অভিভূত হই।
আপনার কবিতা শেখায়। শিক্ষিত কর।।