অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত বাংলা সাহিত্যে এক বহুল চর্চিত নাম

অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত বাংলা সাহিত্যে এক বহুল চর্চিত নাম। কল্লোল যুগের এই লেখক রবীন্দ্রনাথের বেস্টন ছিন্ন করে বাংলা সাহিত্যে এক নতুন ধারার সূচনা করেন। নতুন আঙ্গিকে বপন করেন নতুন ভাবনা, নতুন ভাষা। ফ্রয়েডীয় অবচেতনাবাদের ঘেরাটোপে তার লেখা উদগ্র উদ্দাম কামনা-বাসনার প্রকটতা। রবীন্দ্রনাথ একদিকে অচিন্ত্যকুমারের লেখার গুনগ্রাহী ছিলেন, অন্যদিকে ছিলেন কঠোর সমালোচক। অচিন্ত্য কুমারের লেখা সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘তোমার কল্পনার প্রশস্ত ক্ষেত্র ও অজস্র বৈচিত্র্য দেখে আমি মনে মনে তোমাকে প্রশংসা করেছি। সেই কারণেই দুঃখবোধ করেছি যে, কোন কোন বিষয়ে তোমার পৌন্যপুন্য আছে। বুঝতে পারি সেখানে তোমার মনের বন্ধন। সে হচ্ছে মিথুন প্রবৃত্তি। শনিবারের চিঠি পত্রিকায় সজনীকান্ত দাস মহাশয় ও অচিন্ত্যকুমারের লেখার প্রতি একই অনুযোগ করেন।’
আজ তার জন্মদিন। অধুনা বাংলাদেশের নোয়াখালীতে অচিন্ত্যকুমার ১৯০৩ সালে ১৯ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। পড়াশোনা করেন পশ্চিমবঙ্গে। পেশাগত কর্মজীবন বিস্তৃত ভারতজুড়ে। পূর্ববাংলার প্রতি তার আজীবন ব্যাকুলতা, দুই বাংলার সেইসময় আত্মিকতা তিনি ফুটিয়ে তোলেন তাঁর পূর্ব পশ্চিম কবিতায়।
আজ তার জন্মদিন। অধুনা বাংলাদেশের নোয়াখালীতে অচিন্ত্যকুমার ১৯০৩ সালে ১৯ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। পড়াশোনা করেন পশ্চিমবঙ্গে। পেশাগত কর্মজীবন বিস্তৃত ভারতজুড়ে। পূর্ববাংলার প্রতি তার আজীবন ব্যাকুলতা, দুই বাংলার সেইসময় আত্মিকতা তিনি ফুটিয়ে তোলেন তাঁর পূর্ব পশ্চিম কবিতায়।
“তোমার শীতলক্ষ্যা আর আমার ময়ূরাক্ষী
তোমার ভৈরব আর আমার রূপনারায়ন
তোমার কর্ণফুলী আর আমার শিলাবতী
তোমার পায়রা আর আমার পিয়ালী
এক জল এক ঢেউ এক ধারা
একই শীতল অতল অবগাহন শুভদায়িনী শান্তি।
আমাদের এক রবীন্দ্রনাথ এক নজরুল
আমরা ভাষায় এক ভালোবাসায় এক মানবতায় এক
বিনা সুতায় রাখি বন্ধনের কারিগর
আমরাই একে অন্যের হৃদয়ের অনুবাদ,
মর্মের মধুকর, মঙ্গলের দূত
আমরাই চিরন্তন কুশল সাধক।”
অভূতপূর্ব এক বৈপরীত্য তাঁর রচনায়। বিলাসবহুল ড্রইংরুম, ফুটপাত, জীবন-মৃত্যু, দারিদ্র্য-বৈভব, রক থেকে রতিক্রিয়া, রাজনীতি থেকে ক্রিকেট মাঠ, প্রেমিক থেকে সমাজের দৈন্যতা স্থান পায় তার গল্প উপন্যাস প্রবন্ধে।
অভূতপূর্ব এক বৈপরীত্য তাঁর রচনায়। বিলাসবহুল ড্রইংরুম, ফুটপাত, জীবন-মৃত্যু, দারিদ্র্য-বৈভব, রক থেকে রতিক্রিয়া, রাজনীতি থেকে ক্রিকেট মাঠ, প্রেমিক থেকে সমাজের দৈন্যতা স্থান পায় তার গল্প উপন্যাস প্রবন্ধে।
আবার মহাপুরুষদের জীবনীগ্রন্থ আধ্যাত্মিকতার আবরণে অসীম প্রশান্তিতে তার অবগাহন, তার অমৃত সন্ধান। এ যেনো কঠোরের প্রচ্ছন্নে বিস্তীর্ণ আয়োজন।
তার কবিতায় ফুটে ওঠে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল জীবনানন্দ, চিত্তরঞ্জন, শিশিরকুমার ভাদুড়ী, অরুন্ধতী রায় প্রমুখ বিশিষ্ট মনীষীগণ। পরম নিবেদনের ডালি নিয়ে তিনি চিত্রণ করেন পরম পুরুষ শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ, বীরেশ্বর বিবেকানন্দ, অখণ্ড অমিয় শ্রী চৈতন্য, রত্নাকর গিরিশচন্দ্র।
ব্যতিক্রমী এই লেখক যিনি সমকালীন থেকে হয়ে ওঠেন চিরকালীন, তাঁর রচনার ব্যাপ্তিতে তার লেখনীর জাদুতে, জন্মদিনে তাঁকে শ্রদ্ধা নিবেদন করি।