প্রথম নারী আলোকচিত্রী সাইদা খানম

আলোকচিত্রী সাইদা খানম। আলোকচিত্র : সাহাদাত পারভেজ
মুখোমুখি বাস্তবের রানি
ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথ দুবার ঢাকায় এসেছিলেন। প্রথমবার এসেছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের আমলে। সেই সময় সংবাদচিত্রী হিসেবে রানিকে ক্যামেরাবন্দী করার দুর্লভ সুযোগ হয়েছিল তাঁর। ঢাকা তখন রাজধানী হলেও ছিল মফস্বল শহরের মতো। রানির আগমনে উৎসবমুখর নগর। কেমন করে রানির ছবি তুলবেন দিন-রাত সেই চিন্তায় যেন ঘুম আসে না। রানির ছবি তোলা কঠিন। সংবাদচিত্রী ছাড়া রানির ধারেকাছে যাওয়াও অসম্ভব। তিনি তখন বেগম পত্রিকায় ফটোসাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৬১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি রানি এলিজাবেথ ঢাকায় এলেন। প্লেন এসে নামল পুরোনো বিমানবন্দরে। দিনের আলো ম্লান হয়ে এসেছে। প্লেনের সিঁড়ি দিয়ে রানি লাল গালিচার ওপরে নেমে আসতেই ঝাঁকে ঝাঁকে ক্যামেরার ফ্লাশে আলো জ্বলে উঠল। কিন্তু তাঁর ফ্লাশে আলো জ্বলল না। বুদ্ধি করে ক্যামেরায় হাই স্পিড ফিল্ম ভরলেন। বিনা ফ্লাশে তোলা তাঁর প্রতিটি ছবিই ভালো হয়েছিল। মনের জোর ও উপস্থিত বুদ্ধি না থাকলে সেদিন তিনি ছবি তুলতে পারতেন না। রমনা পার্কের সামনে একটি পুরোনো বাড়ি সাজানো হয়েছে রানির জন্য। রমনায় গাছে গাছে নানা ফুল ফুটে আছে। রানির অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে বাজি পোড়ানো হচ্ছে। আকাশে লাল-সবুজ-হলুদ আলোর ফুলঝুরি ফুটে ফুটে ঝরে পড়ছে। সেদিকে তাকিয়ে রানি মুগ্ধ দৃষ্টিতে হাসছিলেন। আতশবাজির রঙিন আভা পড়ছে রানির চোখে-মুখে। রানির অপূর্ব কিছু ছবি তুললেন তিনি।
পরের দিন রানি বের হলেন বুড়িগঙ্গা ভ্রমণে। রানি যে স্টিমারে যাচ্ছিলেন, তার পাশের একটি লঞ্চে ছিলেন সাইদা খানম। নদীর দুই তীরে অগণিত মানুষ হাত নেড়ে, ঢোল বাজিয়ে রানিকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। রানিও হাত নাড়ছেন মাঝেমধ্যে। ভ্রমণ শেষে রানি যান আদমজী জুট মিলে। এখানে তিনি রানির এত কাছাকাছি ছবি তুলতে পারবেন তা ভাবতেও পারেননি। বিদায়ের আগের দিন রানিকে দেখা গেল অন্য মাধুর্যে। মাথায় হিরে বসানো সরু রাজকীয় মুকুট, গলায় হিরের নেকলেস। মনে হলো বাস্তবের রানি যেন মুহূর্তেই রূপকথার রানি হয়ে গেলেন।
মাদার তেরেসার বেদনাময় মুহূর্ত
মুক্তিযুদ্ধের সময়কার অবাঞ্ছিত শিশুদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য শান্তির দূত মাদার তেরেসা ঢাকায় এসেছিলেন। তাঁর ছবি তোলার জন্য খুব সকালে সাইদা খানম ছুটলেন পুরোনো ঢাকায় খ্রিষ্টানদের আশ্রমে। এ সময় তিনি তেজগাঁওয়ের বটমলী হোমে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। দু-একটা ছবি তোলার পর মাদার তেরেসা হঠাৎ সাইদা খানমকে তাঁর গাড়িতে উঠতে বলেন। এই ঘটনায় সাইদা খানম শুধু বিস্মিতই নন, শ্রদ্ধায় ভরে গেল মন। বটমলী হোমে গিয়ে মাদার তেরেসার ভেতরের রূপটা দেখতে পান সাইদা খানম। অসহায় শিশুদের তিনি বুকের মধ্যে চেপে ধরেন অশ্র“সিক্ত চোখে। তাঁর বেদনাহত মনের আবেগগুলো ক্যামেরায় ধারণ করে রাখেন তিনি।
চাঁদের দেশে তিন নভোচারী
প্রত্যেকের জীবনেই চাঁদের আলোর একটা নিজস্ব অনুভূতি থাকে। বাবার হাত ধরে সপ্তর্ষীমণ্ডল দেখা, কিশোরীবেলায় চাঁদের আলোয় ছুটোছুটি খেলা কিংবা রোমান্টিক জীবনের অনেক শপথ করা হয় চাঁদকে সাক্ষী রেখে। সেই রহস্যময়ী আলোকিত চাঁদের দেশে কোনো দিন যে পৃথিবীর মানুষ পা ছোঁয়াতে পারবে, তা ছিল কল্পনাতীত। পৃথিবীর সব মানুষকে স্তম্ভিত করে ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই তিন নভোচারী নিল আর্মস্টং, এডুইন অলড্রিন ও মাইকেল কলিন্স চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করেন। চন্দ্র বিজয়ের পর তাঁরা সারা পৃথিবী ঘুরেছেন। পূর্ব পাকিস্তানে তাঁরা এসেছিলেন ঝটিকা সফরে। তাঁদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য ফুল নিয়ে রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছিল ঢাকাবাসী। পুরান ঢাকার সরু রাস্তার ভেতর দিয়ে তাঁদের গাড়ি চলল ধীর গতিতে। ফুলের বৃষ্টি ঝরে পড়ে তাঁদের ওপর। বিকেলে শেরাটন হোটেলে তাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে ছবি তোলা শেষে সাইদা খানম বাইরে এসে দেখেন, মাইকেল কলিন্স গাড়ির মধ্যে একা বসে আছেন। হাতে একটা গোলাপ ফুল। সাইদা খানম ছবিটা তুললেন আর অবাক হয়ে ভাবলেন, চাঁদের রহস্য উদ্ঘাটনের পর ফুলের ভেতর কী রহস্য খুঁজছেন তিনি?
আলোয় উদ্ভাসিত সত্যজিৎ রায়
সাইদা খানম অস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ছবি তুলেছেন ৩০ বছর ধরে। দীর্ঘদিন ছবি তোলার কারণে একটা পারিবারিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে দুজনের মধ্যে। চিত্রালীর প্রতিনিধি হয়ে সত্যজিৎ রায়ের লেক টেম্পল রোডের তিনতলা বাসায় প্রথম সাক্ষাৎকার নিতে গিয়েছিলেন সাইদা খানম। ঘরের দরজাটা একটুখানি ফাঁক ছিল। হেমন্তের শেষ বেলায় সাদা শাল জড়িয়ে সত্যজিৎ লিখছেন। বুক কাঁপছে, কেমন করে এমন ব্যক্তিত্বের সাক্ষাৎকার নেবেন। সাইদা খানমকে দেখে বসুন বলেই আবার লেখায় ডুবে গেলেন। কয়েক মিনিট পর মুখ তুলে স্থিরদৃষ্টিতে তাকালেন। অত্যন্ত সাদাসিধে বাংলাদেশের একটি মেয়েকে দেখে সত্যজিতের মনে বোধ হয় করুণাই জেগেছিল, কিংবা সুদূরে হারিয়ে যাওয়া মাটির টান অনুভব করেছিলেন। কারণ সত্যজিতের পূর্বপুরুষের দেশ তো বাংলাদেশ। সেদিন দুজনের মধ্যে কথা হলো কাঞ্চনজঙ্ঘা ছবির কাহিনি নিয়ে। সত্যজিৎ তখন কাঞ্চনজঙ্ঘার শুটিং শেষ করে দার্জিলিং থেকে ফিরে এসেছেন। কেমন আছে পদ্মা নদী–জানতে চেয়ে সত্যজিৎ ছেলেবেলার স্মৃতির কথা বললেন। পদ্মা নদীর ওপর দিয়ে স্টিমারে ঢাকা থেকে কলকাতা যাচ্ছিলেন। খুব ভোরে ঘুম থেকে তুলে মা তাঁকে দেখিয়েছিলেন সূর্যোদয়। বিশাল নদীর ওপরে লাল সূর্যটাই তাঁর মনে আছে। আর কিছু মনে নেই। কথার ফাঁকে ফাঁকে চলে ছবি তোলা। এরপর থেকে আর অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে যেতে হয়নি। চারুলতা শুটিংয়ের সময় সত্যজিৎ রায় কোনো প্রেস ফটোগ্রাফারকে অ্যালাউ করেননি। শুধু সাইদা খানম ও ব্রিটিশ এক পেইন্টারকে প্রবেশ করতে দিতেন। শুটিং রুমে পুরোনো যুগের পালঙ্কের বাজুতে সত্যজিৎ হেলান দিয়ে বসতেন। অল্প আলোয় সমস্ত পরিবেশ আরও রহস্যময় কাব্যিক হয়ে উঠত। পৌরুষদীপ্ত চেহারা, চিন্তা, ব্যক্তিত্ব ও প্রতিভার আলোয় উদ্ভাসিত সত্যজিৎ রায়কে তখন সাইদা খানমের গ্রিক ভাস্কর্যের সুমহান ব্যক্তির মতো মনে হতো। সাইদা খানমের কাছে সত্যজিৎ ছিলেন মানিক দা। তিনি যখন-যেভাবে মানিক দার ছবি তুলতে চেয়েছেন আপত্তি করেননি। বিশেষ করে, সত্যজিতের স্ত্রী বিজয়া রায়ের (মঙ্কুদি) সঙ্গে মানিকদার ছবি তুলতে চাইতেন। মানিক দা তখন হেসে বলতেন, ‘বাদল সহজে ছাড়বে না, তাড়াতাড়ি তুলে ফেলাই ভালো। সাইদা খানমের ডাকনাম ছিল বাদল।’
টুকরো টুকরো আলো ছায়া…
আলোকচিত্রী সূর্যোদয় ও অস্তকে ক্যামেরায় ধরতে ভালোবাসেন। বঙ্গবন্ধুর ছবি তুলতে গিয়ে তাঁর মনে হয়েছে, তিনি সূর্যকে ক্যামেরায় ধরে ফেলছেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর বাবা শেখ লুৎফর রহমান পিজি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর জš§দিনে তিনি তাঁর বাবাকে হাসপাতালে দেখতে যান। বাবা-ছেলের মিলনের ছবিটা অনবদ্য হয়ে ওঠে। এ সময় কবি জসীমউদ্দীনও অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। সেই ছবিটাও এখন ইতিহাস।
বিশ্ববিখ্যাত সারোদ বাদক ও সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ছবি তুলেছেন দীর্ঘ সময়। সুরসম্রাট তাঁকে প্রায়ই চিঠি লিখতেন। সাইদা খানম যখন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ছবি তোলেন, তখন তাঁর মুখে ভাষা নেই। পাইকপাড়াতে ছোট্ট একটা ফ্ল্যাটে স্ত্রী প্রমীলা দেবীর সঙ্গে থাকতেন। ঘরের মধ্যে ঢুকতেই মনটা ভারাক্রান্ত হলো তাঁর। জানালার এক পাশের বিছানায় কবি বসে আছেন। আরেকটা বিছানায় অর্ধশায়িত অবস্থায় প্রমীলা দেবী। বিশ্ববিখ্যাত চিত্রশিল্পী শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ছিলেন আন্তরিক, কথা বলার ভাষা ছিল মনোমুগ্ধকর। সাইদা খানম প্রায় ক্যামেরা নিয়ে জয়নুলের বাসায় যেতেন সৌভাগ্যবশত কোনো দুর্লভ ছবির আশায়। শান্তিনিকেতনে গিয়ে বিখ্যাত চিত্রশিল্পী নন্দলাল বসুরও ছবি তুলেছেন। এ ছাড়া তিনি উত্তম কুমার, সুচিত্রা সেন, সৌমেন্দ্র নাথ ঠাকুর, রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, মৈয়েত্রী দেবী, অরুন্ধতী মুখার্জি, ছবি বিশ্বাস, পাহাড়ী সান্যাল, বিকাশ রায়, চন্দ্রবতী দেবী, ছায়াদেবী, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অনিল চট্টোপাধ্যায়, নমিতা সিংহ, হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায়, মাধব মুখার্জি, সুফিয়া কামাল, শামসুর রাহমান, মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা, ড. নিলীমা ইব্রাহিমসহ অসংখ্য খ্যাতিমান মানুষের ছবি ক্যামেরায় ধারণ করেন।
স্বীকৃতি ও সম্মান
জাপান, ফ্রান্স, সুইডেন, পাকিস্তান, সাইপ্রাস প্রভৃতি দেশে আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে অংশ নেন। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের হয়ে অল ইন্ডিয়া ফটোজার্নালিজম কনফারেন্সে প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৮২ সালে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ এশিয়ান গেমসে বেগম পত্রিকার প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৮০ সালে দিল্লিতে অল ইন্ডিয়া উইমেন্স কনফারেন্স, ১৯৮৬ সালে কলকাতায় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র কনফারেন্স এবং ১৯৯৯ সালে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ ডিপিআই এনজিও ৫২তম সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৯২ সালে বিপিএস গ্যালারি, ১৯৯৭ সালে জয়নুল গ্যালারি, মহিলা সমিতিতে মাদার তেরেসার একক প্রদর্শনী, ২০০১ সালে কলকাতার নন্দনে সত্যজিৎ রায়ের ওপর একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
সাইদা খানম ১৯৫৬ সালে জার্মানির আন্তর্জাতিক কোলন পুরস্কার, ১৯৬০ সালে পাকিস্তান ফটো প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান, ১৯৮০ সালে সাইপ্রাসে কমনওয়েলথ পুরস্কার, ১৯৯৫ সালে জাপানে ইউনেসকো পদক, ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটি সম্মানসূচক ফেলো, ১৯৯৭ সালে অনন্যা শীর্ষ দশ, ২০০০ সালে বেগম পত্রিকার ৫০ বছর পূর্তি পুরস্কার, ২০০২ সালে বিপিএস রজতজয়ন্তী পদক, ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সম্মাননা স্মারক, ২০০৯ সালে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সম্মাননা এবং ২০১১ সালে বাংলাদেশ মহিলা সমিতির বিশেষ সম্মাননা লাভ করেন।
সাংগঠনিক কার্যক্রম
তিনি বাংলা একাডেমী ও ইউএনএবির আজীবন সদস্য। দীর্ঘদিন লেখিকা সংঘের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বাংলাদেশ মহিলা সমিতি, ঘরে-বাইরে নাট্যগোষ্ঠী, বিপিএস ও দৃক গ্রন্থাগারের সঙ্গেও জড়িত। এ ছাড়া ঢাকা লেডিস ক্লাবের সম্মানসূচক সদস্য। আলোকচিত্রের পাশাপাশি তাঁর লেখা গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস ও ফিচার বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপা হয়ে থাকে। তাঁর প্রথম বই ধুলোমুঠি। ২০১০ সালে বেরিয়েছে আÍজীবনী গ্রন্থ স্মৃতির পথ বেয়ে।
রানীকুঞ্জে আলোকচিত্রের রানি
আলোকচিত্রী সাইদা খানমের জন্ম ১৯৩৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর পাবনায়। অত্যন্ত শিক্ষিত একটি পরিবারে জন্মগ্রহণকারী সাইদা খানম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্য ও লাইব্রেরি সায়েন্সে এমএ করেন। ছবি তোলার মতো এই ব্যতিক্রমী কাজকে প্রথমে নেশা এবং পরে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন।
২০২০ সালে ১৮ আগস্ট তিনি পৃথিবী ছেড়ে চলে যান। তাঁর প্রতি সশ্রদ্ধা।