বিংশ শতাব্দীর সর্ব ভাষার শ্রেষ্ঠ কবি পাবলো নেরুদা

লাতিন সাহিত্য কিংবা বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি, রাজনীতিবিদ ও নোবেল জয়ী পাবলো নেরুদার আজ ১১৭তম জন্মবার্ষিকী। কবির প্রকৃত নাম রিকার্ডো এলীসার নেফতালি রিয়েস বাসোয়ালতো । ছদ্মনামেই তিনি বিশ্বখ্যাতি লাভ করেন ।
১৯০৪ সালের ১২ জুলাই চিলির পাররাল শহরে (maule region) নেরুদার জন্ম । শৈশবেই মায়ের মৃত্যু হয়। দশ বছর বয়সেই কবিতা লেখার শুরু। ১৯১৪ সালের এক শীত সন্ধ্যায় প্রথম কবিতা লেখেন । ১৯১৭ সালের ১৮ জুলাই তাঁর প্রথম লিখা আন্তরিকতা ও অধ্যবসায় মাত্র তেরো বছর বয়েসে দৈনিক সংবাদপত্র লা মানানা-তে প্রকাশিত হয়। ১৯১৮ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত তাঁর বহু কবিতা প্রকাশ পায়।
১৯১৯ সালে একটি সাহিত্য প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করে তৃতীয় স্থান লাভ লরেন । কবি লেখা বাবা কখনো পছন্দ করতে না। এজন্য তিনি নিজের নাম পরিবর্তন করে ছদ্মনামে কবিতা লিখতে শুরু করেন। ১৯২১ সালে সান্টিয়াগোতে যান এবং চিলি ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন। ১৯২৩ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ।মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি আন্তর্জাতিক কবি হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন ।

নেরুদার সাহিত্যকর্মে বিভিন্ন প্রকাশ শৈলী ও ধারার সমাবেশ ঘটেছে । তিনি যেমন লিখেছেন ‘টোয়েন্টি পোয়েমস অফ লাভ অ্যান্ড আ সং অফ ডেসপায়ার’-এর মতো কবিতা সংকলন , তেমনই রচনা করেছেন পরাবাস্তববাদী কবিতা , ঐতিহাসিক মহাকাব্য , এমনকি প্রকাশ্য রাজনৈতিক ইস্তাহারও ।
নেরুদার কবিতা সারা বিশ্বে বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়। ১৯৭১ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস নেরুদাকে ‘বিংশ শতাব্দীর সর্ব ভাষার শ্রেষ্ঠ কবি’ উল্লেখ করেন ।

নেরুদার জীবন উত্থান-পতনে বর্ণিল । তিনি একাধিক কূটনৈতিক পদে কাজ করেছেন । চিলিয়ান কমিউনিস্ট পার্টির সেনেটর হিসেবেও কার্যভার সামলেছেন । চিলি থেকে কমিউনিজম উচ্ছেদ হবার পর নেরুদার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয় ১৯৪৮ সালে । কিছুদিন লুকিয়ে থাকার পর পার্বত্য গিরিপথ ধরে তিনি পালিয়ে যান আর্জেন্টিনায়। কয়েকবছর পর নেরুদা সমাজতন্ত্রী রাষ্ট্রপতি সালভাদর আলেন্দের ঘনিষ্ঠ সহকারীতে পরিণত হন । চিলিতে অগাস্তো পিনোচেটের নেতৃত্বাধীন সামরিক অভ্যুত্থানের সময়েই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন । তিন দিন পরেই তাঁর মৃত্যু হয় ১৯৭৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ।
পিনোচের শাসনামলে নেরুদা ১৯৭৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। তাঁর মনে হয়েছিল কোনো এক ডাক্তার পিনোচেটের আদেশে তাঁকে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছেন। নেরুদা ১৯৭৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর তাঁর নিজ বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। অনেকে মনে করেন, তাঁকে স্পষ্টত হত্যা করা হয়েছে।
তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া
1 thought on “বিংশ শতাব্দীর সর্ব ভাষার শ্রেষ্ঠ কবি পাবলো নেরুদা”