শেকড়ের সন্ধানে তরুণদের ছুটতে হবে : লিনু হক

রাজিয়া সুলতানা ঈশিতা : ‘মেয়ে বিচ্ছু’ আপনার প্রথম বই। যাঁর বিষয়বস্তু মুক্তিযুদ্ধ। এই বই কেন লিখতে গেলেন?
লিনু হক: মুক্তিযুদ্ধে মেয়েদের ভূমিকা তেমন ওঠে আসেনি, বিশেষ করে আত্মপ্রচারে অনাগ্রহী নারীদের। আমার মনে হয়েছে তাঁদের কথা নয় কেন? আজিমপুর এলাকার মুক্তিযুদ্ধের সময়ে নারীদের কর্মকাণ্ড নিয়ে এই বইয়ের তুলে ধরা চেষ্টা করছি।
বইচারিতা: বইটির বিষয়বস্তুর সারসংক্ষেপ জানতে চাই।
লিনু হক: মুক্তিযুদ্ধ তো নয় মাসের যুদ্ধ ছিল না, এর একটা পূর্বাপর ছিল। ষাটের দশক, মুক্তিসংগ্রামের বিভিন্ন পর্ব -সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক আন্দোলনসহ মুক্তিযুদ্ধে আমাদের ভুমিকা ।
বইচারিতা:লেখালেখির ক্ষেত্রে আপনার কোন বিষয়টি অন্যদের চেয়ে স্বতন্ত্র মনে হয়।
লিনু হক: আমরা মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম, আমাদের জীবনবোধ ছিল কাঁচের মত স্বচ্ছ, স্পষ্ট ।যখন কেউ ঘোলা চোখে দেখার চেষ্টা করে , তখন আমার কালি, কলম স্পষ্ট হয়ে উঠে। আমার লেখালেখির কোন বিষয়টি স্বতন্ত্র তা নির্ধারণ করবে মূলতঃ পাঠক সাধারণ ।তবু আমি দু কথা বললাম । কারণ মুক্তিযুদ্ধের সত্য ইতিহাসের বিষয়ে আমি অত্যন্ত দুধর্ষ আপোসহীন ।
আমার ‘মেয়ে বিচ্ছু আজিমপুরের মুক্তিযুদ্ধ কাহিনি’ এর ইংরেজী অনুবাদ হচ্ছে। অনুবাদ করছে আমার ছেলে ইরেশ হক। আশা করছি অঙ্কুর প্রকাশনী থেকে খুব শিগগিরই বাজারে আসবে। মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি গণযুদ্ধ, সেই সব গণমানুষের কথা খুব একটা ওঠে আসেনি,আমার ইচ্ছা আছে তাঁদের কথা তুলে আনার।
বইচারিতা: পরবর্তী কী বই লিখছেন?
লিনু হক: আমার ‘মেয়ে বিচ্ছু আজিমপুরের মুক্তিযুদ্ধ কাহিনি‘ এর ইংরেজী অনুবাদ হচ্ছে। অনুবাদ করছে আমার ছেলে ইরেশ হক। আশা করছি অঙ্কুর প্রকাশনী থেকে খুব শিগগিরই বাজারে আসবে। মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি গণযুদ্ধ, সেই সব গণমানুষের কথা খুব একটা ওঠে আসেনি,আমার ইচ্ছা আছে তাঁদের কথা তুলে আনার। আমি প্রতিদিন কিছু না কিছু লিখে থাকি। সে লেখাগুলো সন্নিবিষ্ট করে বই প্রকাশের করার ইচ্ছা আছে।

বইচারিতা: মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আপনার অংশগ্রহণ কেমন ছিল?
লিনু হক: মুক্তিযুদ্ধ ও তৎপরবর্তী ১৯৭২-৭৮ সালে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন প্রেক্ষাপট নিয়ে আমার লেখার ইচ্ছা আছে। মুক্তিযুদ্ধে আমার অংশগ্রহণের কথা আমি আমার ‘বিচ্ছু’ বইতে তুলে ধরেছি।
বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, বর্তমান প্রজন্মের অল্প সংখ্যক ছাড়া বৃহত্তর অংশ খুব একটা শেকড়ের সন্ধানে যায় না।ব্যক্তি বা জাতির অস্তিত্ব নির্ভর করে তার শেকড়ের উপর।তার অতীত, তার ইতিহাস জেনে ঋদ্ধ হয়ে সম্মুখ পানে এগিয়ে যেতে হবে।
বইচারিতা: যুদ্ধোত্তর দেশে তরুণদেরকে মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী সময়ের জন্য আপনি কী বলতে চান?
লিনু হক: বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, বর্তমান প্রজন্মের অল্প সংখ্যক ছাড়া বৃহত্তর অংশ খুব একটা শেকড়ের সন্ধানে যায় না।ব্যক্তি বা জাতির অস্তিত্ব নির্ভর করে তার শেকড়ের উপর।তার অতীত, তার ইতিহাস জেনে ঋদ্ধ হয়ে সম্মুখ পানে এগিয়ে যেতে হবে।
আপনিই বলেন,আমরা সামাজিক, সাংস্কৃতিক , রাজনৈতিকভাবে যে দেশ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলাম, তা পেয়েছি কি? আমি মনে করি এক প্রজন্মের অর্জন একাধিক হয় না। তাই বর্তমান প্রজন্মের নৈতিক দায়িত্ব এই দেশটাকে প্রতিষ্ঠা করা।
বইচারিতা: আপনাকে ধন্যবাদ
লিনু হক: ধন্যবাদ