চেতনায় নজরুল

চুরুলিয়া থেকে উড়ে এসে ঝড়টা আছড়ে পড়লো সারা বাংলার আকাশে
রবীন্দ্রনাথ লিখলেন — দুর্দিনের এই দুর্গশিরে উড়িয়ে দে তোর বিজয়কেতন
দামাল সেই ঝড়কে অবলীলায় বুকে টেনে নিল বাংলাদেশ
জাতির চেতনায় জেগে রইলো অনিমেষ শিখা।
পেটের ভিতর ঘূর্ণির মতো পাকিয়ে ওঠে
দারিদ্রের আগুন
বিরহের আগুন
ব্যথার আগুন
শিরায় শিরায় অমৃত সুধার সৃষ্টিসুখ উল্লাস
আগ্রাসী কলমে বিদ্রোহী রণক্লান্ত হুঙ্কার
সুরের মায়াবী জাদুতে খুঁজে ফেরে আপনার চেয়ে আপনজন।
সৈনিকের পোশাকে ঘর ছেড়ে কখনো তুমি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে
গানের মূর্ছনায় একই দেহে তুমি ঈশ্বর কখনো আল্লাহ
জেলবন্দি তোমার কলমের পরাক্রমী আঘাতে ভেঙে পড়ে লৌহকপাট
ফুলেল নার্গিস বনে সেই তুমিই আবার প্রেমময় পারাবত প্রিয়া।
আমরা তোমার স্বরূপ চিনতে পারিনি কবি
তোমার আগুনে আমরা পোড়াতে পারিনি মোহের অন্ধ উজান
শ্যামল বাংলার পথে পথে ফেরেনি তোমার ভালোবাসার গান
আজন্ম ঠুলিপরা চোখে আজও ভাঙেনি ঘুম — সাম্যবাদী হিন্দু-মুসলমান।
তোমাকে চিনেছে শুধু সৃষ্টিকর্তা
তোমার অশ্বমেধের কলম থামাতে চেয়েছে কঠিন বলগা টেনে।
পরাজিত শত্রুর ছলনায় রেখেছে তোমাকে
ফুলের জলসায় নীরব করে।
ফাল্গুনী দে : কবি, ভারত