‘মানুষ যতদিন স্বপ্ন দেখবে ততদিন কবিতা বেঁচে থাকবে’

‘‘আজি হে প্রভাতে, প্রভাত বিহীন/স্মৃতির কলম জুড়ে রয়েছো তুমি/চারিপাশে।/নিঃশব্দ বেদনা আছড়ে পড়ে।/ প্রাচীন বটের পদতলে।/তোমাকে প্রণাম!/ইতিউতি শব্দের মাঝে/নিরর্থক অক্ষরগুলো/আজ ছড়িয়ে পড়েছে চতুর্দিকে।/প্রতিটি প্রভাত এখন স্বপ্ন দেখে/শুধুই তোমাকে ঘিরে…’’
স্মৃতির দহনবেলায় মনে লাগে এ কী ভীষণ ব্যথা। ভুলতে পারি না, চোখে নামে শ্রাবণ ধারা। কিন্তু তা সকলেরই অলক্ষ্যে বৃষ্টিভেজা বর্ণমালায় দেখি শুধু তোমারই ছবি। হ্যাঁ প্রিয় কবি, সম্পাদক, অভিভাবক প্রভাত চৌধুরী।
বিগত কয়েকদিন ধরেই বাংলার আকাশ বিষাদময়। একে একে নিভে যাচ্ছেন বাংলার নক্ষত্ররা। আলোহীন হচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরেই বাংলার আকাশবাতাস। অন্তরালে দহনে পুড়ছে শোকগাঁথা। ইতিমধ্যে শাঁওলী মিত্র, মিহির সেনগুপ্ত, নারায়ণ দেবনাথ, বিরজু মহারাজ, ঠিক তারপরই সকলের প্রিয় কবিতা পাক্ষিকের প্রাণপুরুষ প্রভাত চৌধুরী। আলোশূন্য বাংলা এখন।
প্রভাত চৌধুরী নামটির সঙ্গে পরিচিত প্রায় নব্বইয়ের দশকে। তখন আমি সদ্য মাধ্যমিক দিয়েছি (১৯৯৫)। জেঠু কিরণশঙ্কর মৈত্রর সঙ্গে প্রভাত চৌধুরীর বেশ মিত্রতা ছিল। জেঠুর সঙ্গে কলেজস্ট্রিটে যেতাম। দেখতাম রাস্তার ধারে সারি সারি বইয়ের দোকান। জেঠুই প্রথম আলাপ করিয়েছিলেন কবিতা পাক্ষিকের স্রষ্টা প্রভাত চৌধুরীকে। এরপর ‘৯৫, ‘৯৭ বইমেলায় আরও ভালো করে কাছ থেকে দেখা সারাজীবনের অক্ষরপিপাসু মানুষটিকে। ২০১৫ সালে ডিসেম্বর মাসে কল্যাণী বইমেলার লিটল ম্যাগাজিন মঞ্চউদ্বোধনেও এসেছিলেন প্রভাত চৌধুরী।
প্রভাত চৌধুরীর জন্ম ১৯৪৩ সালের ১৫ জুন, মঙ্গলবার বাঁকুড়ার হাটকেষ্টনগর ছোটদাদুর বাড়িতে। তাঁর আদি পৈতৃক বাড়ি বাঁকুড়া জেলার কাদাকুলি গ্রামে। কবির পিতার নাম গোপালচন্দ্র চৌধুরী ও মাতা শঙ্করী চৌধুরী। প্রাথমিক শিক্ষাগ্রহণ রানি ভবন স্কুলে। তারপর মাধ্যমিক দেন ভবানীপুরের সাউথ সুবার্বান মেইন স্কুলে এবং উচ্চ মাধ্যমিক বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। এরপর সুরেন্দ্রনাথ কলেজ। রাজ্য সরকারি কর্মচারী ছিলেন। ১৯৬৭ সালে স্বাস্থ্য আধিকারিক পদে যোগদান করেন। প্রথমে প্রশাসন এবং পরবর্তীতে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখায়।
চড়াই-উৎরাই জীবনের টানা ২৯ বছর কবিতা পাক্ষিক (১৯৯৩ সালে প্রথম আত্মপ্রকাশ) প্রকাশ করে চলেছিলেন তিনি নিজ হাতে। তাঁর হাতে গড়া কবিতার কাগজ কখনো থেমে থাকেনি তাঁর কবির চলার স্বাচ্ছন্দে তা ছিল বেশ সাবলীল। আর বাংলার তরুণ কবিদের প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছিল কবিতা পাক্ষিক। অধুনান্তিক কবি প্রভাত চৌধুরীর কবিতা ছন্দবদ্ধ স্বপ্ন যাপনের রান্নাঘর। কবি বলতেন— ‘আমি মূলত পক্ষাঘাতগ্রস্ত অথর্ব সভ্যতার জারজ সন্তান।’ উজ্জ্বল বর্ণমালায় বহুমাত্রিক রূপরেখার শব্দের মাধুকরিতে সেজে উঠত তাঁর পংক্তিমালা। বাংলা সাহিত্যের একটি ঘরানার নাম হয়ে উঠেছিল তিনি নিজেই। তাঁর ‘কবিতার ভবিষ্যৎ, ভবিষ্যতের কবিতা’য় কবি অকপটেই বলেছেন— “আমি একজন কবিতা-লেখক। কবিতা লিখতে ভালো লাগে, তাই লিখি। যতদিন এই ভালো লাগাটুকু থাকবে ততদিন লিখে যাব। ভালো না লাগলে তৎক্ষণাৎ লেখা ছেড়ে পোলো মাঠে যাবো। কিংবা কোনো শৈলাবাসে।” তিনি আরও প্রকাশ করেন— “ঢুকেই যখন পড়লাম তখন অনুসন্ধান করে দেখতে দোষ কী! খুঁজে দেখি সেই পোতাশ্রয়টির সন্ধান পাই কিনা! কোথায় সেই ফুটো এক পয়সাটা রেখে এসেছিলাম। তাহলে কি আমি খুঁজে পেতে চাইছি আমার শৈশব বা অতীত। আসলে অতীত থেকে শুরু না করলে কিছুতেই বর্তমানে পৌঁছনো যাবে না। বর্তমানে ছুঁয়ে তো ভবিষ্যতের দিকে হাঁটাচলা।” সুন্দর অভিব্যক্তিতে কবিকে আমরা খুব কাছ থেকে উপলব্ধি করতে পারি কবিতা-অন্তপ্রাণ প্রভাত চৌধুরীকে। আর ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে বলেছিলেন— ‘মানুষ যতদিন পর্যন্ত স্বপ্ন দেখবে, ততদিন কবিতাও থাকবে।’ সত্যিই কথাটি কবিতাপ্রেমিকদের সকলেরই মনের কথা এটি।
গত ১৯ জানুয়ারি ২০২২ দিনটি ছিল একদিকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিন যেমন, তেমনি আরেকদিকে ছিল নাট্যাচার্য বিজন ভট্টাচার্যের মৃত্যুদিন। আর এই বুধবার (রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে কলকাতার বাঙ্গুর হাসপাতালে) রাতে ফেসবুকে ভেসে এলো কবির অনন্তধামের যাত্রা। না! তিনি আর নেই। ভাবতেই বুকে লাগল দমকা আঁচ। বাংলায় পোস্টমডার্ন কবিতার প্রাণপুরুষ প্রবীণ কবি প্রভাত চৌধুরী আর নেই। বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। অনেকটা শূন্যতা অন্ধকার গ্রাস করল আমায়। বুকের ভেতর খাঁ-খাঁ করে ওঠে! অন্ধকার আরও গভীর থেকে গভীরে প্রত্যক্ষ করতে লাগলাম। নিজেকে খানিক একা মনে হল সম্পূর্ণ ঘরটিতে। কোথায় যেন থেমে গেলাম। স্মৃতির সমুদ্রে আছড়ে পড়ে আমার মনচৌকাঠে। যিনি সারাটা জীবন শুধু কবিতার স্নানঘরে অক্সিজেন নিয়ে বাড়বাড়ন্ত নিরন্তর আপডেট করে যাচ্ছেন, পোষ্টমডার্ন করে চলেন বাংলা কবিতায় তিনি সত্যিই বাংলা সাহিত্যের পরিপূরক স্রষ্টাও বটে! বোধের অন্তিম পর্যায়ে শ্বাসবায়ু দিয়ে চলাচল করে যে শব্দমালা তা বোধহয় কবিতা পাক্ষিকের প্রাণপুরুষের কাছে প্রতিনিয়ত শিক্ষা পাওয়া। বিশেষ করে নতুনদের তিনি একটু বেশিই উৎসাহ দেখাতেন কবিতা লেখার। বাংলা সাহিত্যের জন্য ছিল তাঁর নিবেদিত মনপ্রাণ তথা কবিতাঅন্ত প্রাণ। কবি যেমন খেতে ভালোবাসতেন তেমনি নেশা ছিল রান্না করা, মাছ ধরা আর ফুলগাছ খুব ভালোবাসতেন।
প্রভাত চৌধুরী ষাটের দশকের কবি ছিলেন। তাঁর লেখালিখির তালিকা সুদীর্ঘ। টানা পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে তিনি কবিতায় উৎসর্গীত প্রাণ। পবিত্র মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত উল্লেখযোগ্য লিটল ম্যাগাজিন ‘কবিপত্র’তে সম্পাদনা করেছিলেন কবি প্রভাত চৌধুরী। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘কৃত্তিবাস’ পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয় তাঁর কবিতা।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে তিনি একমাত্র কবিতার ঈশ্বর মানতেন। কবিতা পাক্ষিক থেকে প্রকাশিত তাঁর সম্পাদিত ‘পোস্ট মডার্ন বাংলা কবিতা’ বইটি তিনি রবীন্দ্রনাথকেই উৎসর্গ করেছিলেন। এতটাই রবীন্দ্র-ভক্ত ছিলেন তিনি। তাঁকে বাংলা অধুনান্তিক কবিতায় প্রথম পুরুষ বলেছিলেন কবি সমীর রায়চৌধুরী। সমীর রায়চৌধুরী ২০০৯ সালে লিখেছিলেন ‘নারীকে ডিভাইন না করে অধুনান্তিকে পৌঁছনো যায় না।’ বহু পত্র-পত্রিকায় লিখেছেন কাব্য, কাব্যনাটক, উপন্যাস, ভ্রমণকাহিনি ও গদ্যগ্রন্থ। তাঁর কয়েকটি প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ হল— ‘শুধু প্রেমিকের জন্য’ (প্রথম কাব্যগ্রন্থ, ১৯৬৬), ‘দিন বদলের পূর্বাভাস’ (১৯৭১), কাঠের পা, ঘোড়ার পা’ (১৯৯৫), ‘সাক্ষাৎকার’ (১৯৯৭), ‘সাদা খাতা’, ‘পূর্বাহ্নের কবিতা’, ‘নোটবই’। ‘অনুপম কাহিনি, একটি পোস্টমডার্ন টেক্সট’ তাঁর একটি উল্লেখযোগ্য বই।
এ প্রসঙ্গে একটু বলি, তিনি কল্যাণী থেকে প্রকাশিত ‘মৈত্রীদূত’ সাহিত্য ও সংবেদনশীল পত্রিকায় প্রায়ই লেখা পাঠাতেন এবং তা ছাপাও হয়েছে বেশ কয়েকবার। আমার সাথে তাঁর পূর্ব পরিচিতি থাকা সত্ত্বেও তিনি প্রায়শই কথা বলতেন আমার পত্রিকা ও লেখা সম্বন্ধে। আমাকে বলতেন বিকেল ৫টার পর ফোন করতে। প্রায়ই বলতেন তাঁর পটলডাঙা স্ট্রিটের বাড়িতে যেতে। সালটি ২০২০। শারদীয়া সংখ্যায় লেখা চাইলে তিনি বলেন— ‘কটা দিন একটু দেরি করো। আমি ঠিক পাঠাব।’ তিনি পাঠালেন। বললেন— “দেখ। তোমার ভালো লাগলো কিনা! আমি তোমার ‘কুশল’ নাম নিয়েই একটি সিরিজ করেছি। নাম দিয়েছি ‘কুশল সংবাদ’।” সেই ঘনআনন্দমাখা স্নিগ্ধ-সন্ধ্যা আমার মনে সুখস্মৃতি হিসেবে আজীবন রয়ে যাবে। এরপর তিনি ‘কুশল সংবাদ’ নিয়ে একটি কবিতার বই প্রকাশ করলেন। সালটি ২০২০। করোনা মহামারীর আতঙ্কে তখন আমার যাওয়াও হয়নি। তিনি বললেন— “আমি নাসেরকে দিয়ে বইটি অনলাইনে প্রকাশ করার কথা বলেছি। তোমায় এখন অতদূর থেকে লকডাউনে আসতে হবে না।” ঘরে বসেই নাসের হোসেনকে দিয়ে ২০২১ সালে প্রকাশ পেল— প্রভাত চৌধুরীর ‘কুশল সংবাদ’ কাব্যগ্রন্থটি। আমি মুগ্ধ। এই স্মৃতিকথা লিখতে বসে এখন অকপটে বলতে ইচ্ছে করছে। তা না হলে আর বলা হয়তো হবে না। ফেসবুকে হয়তো বন্ধুরা অনেকেই এসব জানেন।
নাসের হোসেন, গৌরাঙ্গ মিত্রকে দুই প্রিয় কবিবন্ধুকে হারিয়ে প্রভাত চৌধুরী অনেকটাই একাকিত্ব দহন করেছিল তাঁকে। তিনি প্রায় পোষ্ট করতেন নাসেরদা কিংবা গৌরাঙ্গ মিত্র ওঁনাদের স্মৃতি কথা নিয়ে। নাসেরদাকে হারিয়ে কবিতাপাক্ষিক নড়বড়ে হয়ে পড়েছিল তা তিনি অকপটেই স্বীকারও করেন। প্রভাত চৌধুরী তাঁর দুই বন্ধু নাসের হোসেন, গৌরাঙ্গ মিত্র ওঁনাদেরও কবিতা পাঠিয়েছিলেন মৈত্রীদূতে প্রকাশ করার জন্য। ‘পুজো সংখ্যা’ বললে উনি খুব রেগে যেতেন। বলতেন— ‘পুজো সংখ্যা’র জন্য আমার কাছে কোন লেখা নেই। পুজো সংখ্যা বললে আমি লেখা দেব না।’ বলবে— ‘শারদীয় সংখ্যা’। এমনি ঠোঁটকাটা ধরনের হলেও ভিতরটা ছিল সারল্যমাখা। সবসময় বলতেন— কবিতাকে ‘আপডেট’ করা কবিদের অন্যতম প্রধান কাজ।
একদিন বিকেলে প্রভাত জেঠু ফোনে বললেন— “কুশল তুমি তো কবিতা লেখ। আমি দেখি। আমার কবিতা পাক্ষিকে লেখা পাঠাবে আর ‘কবিতা পাক্ষিক’ থেকে বই প্রকাশ করতে পারো।” আমি বললাম— “জেঠু, তুমি আমার কবিতা দেখ; ওগুলো হয় তো! মানে কবিতা হয়ে ওঠে তো।” উনি বললেন— “হবে না কেন! দেখবে আমি ‘লাইক’ করি, কম্যান্ডও দি। তবে সব স্বাভাবিক থাকলে একদিন এসো— আমি তোমায় বানান আর ব্যাকরণগত কিছু নিয়মনীতি বলবো।” কবিতার ঈশ্বরের মুখে এমন কথা শুনে নিজেকে নিয়ে বেশ গর্ব মনে হচ্ছিল, যে আমি তাহলে একটু একটু লিখতে পারি, আর কি! এরপর বেশ কয়েকবার কবিতা পাক্ষিকে লেখা পাঠিয়েছি। প্রতিবারই ছাপা হয়েছে। গুচ্ছ কবিতাও ‘কবিতা পাক্ষিক’ ছেপেছে আমার। ইতিমধ্যে বেশ কতগুলো কবিতা পাঠালাম ‘কবিতা পাক্ষিক’ থেকে বই হবে বলে। কাব্যগ্রন্থটির নাম ঠিক হল ‘জ্যামিতি ভাঙছে আলো’। বইটি উৎসর্গ করবো কিরণশঙ্কর মৈত্র ও প্রভাত চৌধুরী দু’জনকে। সব ঠিক। জ্যোতির্ময় মুখোপাধ্যায়কে সব দেখিয়ে নিতে বললেন। বাঁধ সাধলো ভূমিকা লেখায়। প্রভাত জেঠুকে বললাম ভূমিকা লেখার জন্য। উনি রাজি হলেন। কিন্তু শরীর সুস্থ না থাকায় সেভাবে লিখতে বসতে পারলেন না। পাণ্ডুলিপি দেখে ভূমিকা লিখবেন বললো। জ্যোতির্ময় বলল— তুমি দাদা দেখা করে বসে থেকে লেখাতে পারলে ভালো! উনি কবিতা পাক্ষিকেরই এডিটোরিয়ালই ঠিক মতো লিখতে পারছেন না, অসুস্থতার জন্য। আর এভাবেই বইটি এখনো হিমঘরে পড়ে রইলো টানা দু’বছরের উপর। তবে পাণ্ডুলিপিটি বেরবে ঠিকই তবে তিনি দেখে যেতে পারলেন না, এই আফশোস চিরটা কাল থাকবে আমার।
জীবনের শেষ দিনগুলিতে তিনি প্রায় অসুস্থ থাকতেন, কিডনির সমস্যায় সপ্তাহে তিন দিন ডায়ালেসিস চিকিৎসা চলতো। আবার সুস্থ হলেই প্রবল অক্ষর পিপাসু হয়ে উঠতেন। অক্ষর যাপন চলত নিয়মিত, শরীর একটু সায় দিলেই কলম ধরতে বিন্দুমাত্র অনিচ্ছা প্রকাশ করতেন না। এমনকি কেউ তাঁর কাছে লেখা চাইলেও কবি বিন্দুমাত্র ইতস্তত না করেই লেখা পাঠিয়ে দিতেন প্রায়শই পত্রিকায়। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি সৃষ্টিশীল ছিলেন। নিঃস্বার্থ কারিগর হিসেবে বাংলাসাহিত্য চিরকাল তাঁকে স্মরণ করবে একথা বেশ জোর গলায় বলায় যায়। বাংলা পোস্টমডার্ন কবিতার পথিকৃৎ ভবিষ্যৎ কবিদের দৃষ্টান্ত স্বরূপ এক অধ্যায় প্রভাত চৌধুরী। তাঁর মৃত্যুসংবাদে চতুর্দিকের বাতাসকে করেছে বেদনাময়, গভীর শোকের ছায়া বাংলা কবিতা জগতে আছড়ে পড়েছে। কবি রেখেগেলেন তাঁর স্ত্রী যূথিকা চৌধুরীকে, যিনি সারাটা জীবন কবির পাশে থেকেছেন শক্ত লাঠি হয়ে; পত্রিকার প্রকাশক ও সত্ত্বাধিকারী হিসাবে তাঁর নামই ছাপা হতো। আর আছেন পুত্র, পুত্রবধূ, নাতনি ও চার ভাই, চার বোন এবং তাদের পরিবারবর্গ।
কুশল মৈত্র : সম্পাদক, মৈত্রীদূত, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত