বিধ্বংসী প্রহর, পর্ব— ১৮

‘আমার কাছে কিছু ডকুমেন্ট আছে। আই ওয়ান্ট টু শো ইউ।’
কন্ঠটা জিলানীর অপিরিচিত, যেমন অপরিচিত এই মোবাইল নাম্বার। অফিসে পা রাখতে না রাখতেই এই কলটা এসেছে। জিলানী প্রায় সব কলই রিসিভ করেন। কেননা অনেক সময় অনেক অপরিচিত লোকের কল থেকে তিনি অনেক তথ্য পেয়ে যান।
‘কিসের ডকুমেন্ট ?’ জিলানী জিজ্ঞেস করলেন।
‘রিফাত ইসলামের ক্রাইমের।’ওপাশ থেকে জবাব এলো।
‘আপনি কে ?’
‘আমি ব্লু স্কাই এন্টারপ্রাইজের একজন সিনিয়র একজিকিইটিভ।’
‘ব্লু স্কাই এন্টারপ্রাইজ’! তার মানে রিফাত আপনার সহকর্মী ?’
‘ঠিক ধরেছেন।’
‘কোথায় আসতে হবে ? অফিসে ?’
‘না। অফিসে রিফাতের পক্ষের লোকজন আছে। সাত মসজিদ রোডের ‘রেইনবো’তে এলে ভালো হয়। কফি খেতে খেতে কথা বলা যাবে।’
জিলানী কিছুক্ষণ ভেবে নিলেন। হয়তো তদন্তসহায়ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে ! তারপর বললেন,‘ঠিক আছে। আজকে বিজি আছি। কাল বেলা ১১টায় ।’
‘একটা অনুরোধ। খুব ভালো হয় যদি একা আসেন। আমিও একা থাকবো।’
‘ওকে। আপনি টাইমলি আসবেন।’
‘সিওর !’
এদিকে রিফাতকে পাঁচদিনের রিমান্ডশেষে আদালত হাজির করে সিআইডি’র পক্ষ থেকে আরও সাতদিন রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছিল। শুনানি এবং উপস্থাপিত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনার পর আদালত আরও চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
ইন্সপেক্টর জিলানী তাঁর সেকশনের ডাক-ফাইল দেখলেন। কম্পিউটারে ই-মেইল চেক করলেন। নতুন কোন মেইল নেই। আজকের সংবাদপত্রটা হাতে নিয়ে শিরোনামগুলো একনজর দেখে নিলেন। এরপর মোবাইলটা হাতে নিয়ে রাইসকে কল দিলেন।
‘সেই দাড়িওয়ালা ছেলেটার ছবি তুলতে পেরেছো ?’
রাইস একটু নিরিবিলি জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালো। এদিক ওদিক তাকালো। আশে পাশে কেউ নেই যে তাদের কথোপকথন শুনতে পাবে।
‘স্যার ওই ছেলেটা গতকাল বিকেলে যে বেরিয়েছে, রাতে আর ফেরে নি। কাল যার সাথে আমরা কথা বলেছিলাম সে আমাকে জানালো।’
‘হুঁ, ভেরি সাসপিশাস ! তুমি এখন কোথায় ?’
‘আমি এখানেই ছোট্ট একটা চায়ের স্টলে আছি। এখান থেকে ওই ঘরের এন্ট্রানস্ দেখা যায় স্যার।’
‘কভারে আছো তো ?’
‘জী স্যার। দাঁড়ি লাগিয়েছি, মাথায় গোলটুপি আর গায়ে পাঞ্জাবি-পায়জামা পরেছি।’
শুনে জিলানী একটু হাসলেন। খুব সিনসিয়ার কর্মী ওরা দুজন। যেমন সোহরাব, তেমনই রাইস।
‘তোমার পরিচয় কী ?’
‘আমিও একজন মৌলভী স্যার।’
‘না। তুমি নিশ্চিন্তপুর কওমি মাদ্রাসার মোহাদ্দেস।’
‘ওকে স্যার। কিন্তু নিশ্চিন্তপুরটা কোথায় ?
‘নারায়ণগঞ্জে। তুমি বলবে, তাকে ওই মাদ্রাসার মসজিদে মোয়াজ্জিনের কাজ দেওয়ার জন্য খুঁজছো।’
‘স্যার, প্রশ্ন করতে পারে যে নিশ্চিন্তপুররের লোক এখানে মোয়াজ্জিন খোঁজে কেন ?’
‘বলবে, গতকাল যে দুজন এনজিওকর্মী এসেছিল তাদের একজনের বাড়ি তোমার মাদরাসার পাশে। ওই মৌলভীর সুনাম শুনে সে তোমাকে জানিয়েছে।
‘এ তো দারুণ আইডিয়া স্যার !’
‘শোনো, কড়া নজর রেখো। আমার বিশ্বাস, তাকে পেলে আমাদের ইনভেস্টিগেশনের মোড় ঘুরে যাবে। আর হ্যাঁ, তোমার একটা সেলফি পাঠাও। দেখি তোমাকে কেমন দেখাচ্ছে।’
রাইসের সেলফি চলে এলো মোবাইলে। জিলানী দেখলেন। বাহ্ ! কে বলবে এটা সিআইডি’র সাব ইন্সপেক্টর রাইসুল হক ! পুরোপুরি একজন হুজুর ! জিলানী মৃদু হাসলেন।
শঙ্কর এলাকা। পিন্টু তো অবাক, জিলানী সাহেব তার বাসায় ! আবার নার্ভাসও, কী থেকে কী জিজ্ঞেস করেন। একটা বেতের চেয়ার টেনে পিন্টু নিজেই মুছলো। জিলানীকে বসতে দিলো।
‘পিন্টু, আমার হাতে সময় কম। আপনার কাছে রেজাউদ্দিন সাহেবের চেকবুক কিভাবে এসেছে একটু বলুন। একদম সত্যিটা বলবেন।’
‘চেকবুকটা স্যার ? আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন চেকবইতে চেকের পাতা সব শেষ। শুধু মুড়িগুলো আছে। মানে, শেষ পাতাটা সই করে টাকা তোলার জন্য আমাকে দিয়েছিলেন।’
‘সব সময় কি চেক লিখে আপনাকে দিতেন ?’
‘না স্যার। বেশির ভাগ সময় জেরিন ম্যাডামকে দিতেন। ম্যাডাম নিজের চেক বা তার বাবার চেকের টাকা নিজেই তুলতেন। তবে কখনো কখনো বিশ্বস্ত কাউকে দিয়ে তোলাতেন। এখনই টাকা দরকার— এমন অবস্হা হলে রেজা স্যার আমাকে চেক দিতেন। আমি তুলে এনে দিতাম।’
‘নিধিকে দিয়ে তোলাতেন না ?’
‘একেবারে ঠেকে না গেলে তাকে দিতেন না।’
‘কেন ?’
‘হয়তো ভাবতেন, মেয়ে মানুষের পক্ষে এতো দূরে গিয়ে টাকা আনাটা রিস্কি।’
‘জেরিন কি মেয়ে মানুষ না ?’
‘উনি তো নিজের মেয়ে ! তাছাড়া উনি গাড়িতে যাতায়াত করতেন।’
‘রেজাউদ্দিন সাহেব না প্যারালাইজড, স্বাক্ষর করতেন কিভাবে ?’
‘ওনার বামদিকটা প্যারালাইজড। ডানদিকটা মোটামুটি স্বাভাবিক ছিল। ডান হাতে লিখতে পারতেন, টুকটাক কাজ করতে পারতেন।’
‘আচ্ছা, টাকা তুলতে বললে তো শুধু চেক কেটে দেবেন, পুরো চেক বই দিয়ে দিলেন কেন ?’
‘সেদিন রেজা স্যার চেক সই করে চেকবইটা নিধির কাছে দিয়েছিলেন আমাকে দেওয়ার জন্য। নিধি আমাকে দিয়েছিল। হয়তো শেষ পাতা ছিল বলে চেকবইসহ দিয়ে দেন।’
‘ও নিধি আপনাকে দিয়েছিল ?’
‘জী স্যার।’
‘টাকা তোলার আগে ওই স্বাক্ষর করা চেকের পাতা আপনার কাছ থেকে রিফাত নিয়ে গিয়েছিল ?’
‘না স্যার, উনি কেন নেবেন ? আর আমিই বা কেন দেবো ? তাছাড়া দিনের বেলায় তো রিফাত সাহেব অফিসে থাকেন।’
‘রেজা সাহেব সই করার কতক্ষণ পর নিধি আপনাকে চেকটা দিয়েছিল ?’
‘এটা জানি না স্যার। সই কখন করেছেন তা আমি দেখি নি।’
‘আপনি চেক বই মালিককে ফিরিয়ে দিলেন না কেন ?’
‘কিভাবে দেবো ! এরপর তো উনি গায়েবই হয়ে গেলেন !’
‘দেখলাম চেকটা কাটা হয়েছিল ১৬ জানুয়ারি। মানে রেজা সাহেব গুম হওয়ার তিন দিন আগে।’
‘জী। জেরিন ম্যাডাম চলে যাবার চার দিন পর।’
ইন্সপেক্টর জিলানী একটা ঘটনার সাথে আরেকটা ঘটনা মেলাবার চেষ্টা করলেন। সেই সাথে তাঁর মস্তিষ্কে একটা পর্যবেক্ষণও ধারণ করে নিলেন।
‘পিন্টু, আপনি আমার অনুমতি না নিয়ে ঢাকা শহর থেকে কোথাও যাবেন না। ঠিক আছে ?’
‘অবশ্যই স্যার।’
এ সময় পিন্টুর ছোট বোন স্বর্ণা এক গ্লাস জুস নিয়ে এলো। জিলানী তাকে ধন্যবাদ দিয়ে বললেন তিনি খাবেন না। তারপর ঘর থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠলেন। পিন্টুর আর্থিক অবস্হা যে ভালো নয়, তা পিন্টুর ঘরে এসে জিলানী ঠিকই বুঝেছেন।
জিলানী সিকিউরিটি ম্যান রুস্তমকে কল দিলেন। রুস্তমকে বললেন নিধিকে যেন গেটের বাইরে যেতে দেওয়া না হয়, তিনি আসছেন। জিলানী মোবাইলে তাঁর সহযোগী সোহরাবকে বললেন বিকেল তিনটায় রেজা সাহেবের বাড়ির গেটে থাকবার জন্য। তিনি ধানমন্ডি থানার দিকে রওয়ানা হলেন।
জিলানী যখন ধানমন্ডি পৌঁছুলেন তখন ঘড়িতে সময় ১২টা পেরিয়েছে। সূর্যটা মাথার উপরে, কিন্তু ঘন মেঘের আড়ালে ঢাকা পড়ায় দৃশ্যমান নয়। বাতাসে প্রবাহ নেই, আর্দ্রতা আছে। উষ্ণতার কারণে শরীর উত্তপ্ত। জিলানীর মন চাইছে ধানমন্ডি লেকের পানিতে ঝাপ দিয়ে শরীরটা ঠান্ডা করতে।
থানায় গিয়ে ওসি সাহেবের সাথে এবং এসআই রাজিবের সাথে আলোচনা করলেন। লকআপে থাকা রিফাতকে আবারও কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করলেন। চা-বিস্কুট খেলেন। জিলানী দুপুরে ভাত খান না।
বিকেল সাড়ে তিনটা। নিধি জেরিন ম্যাডামের ড্রেসিং টেবিলের সামনে। দু’বার কলবেলের আওয়াজ শুনে দরজা খুললো। দেখে ইন্সপেক্টর জিলানী।
‘ও আপনি ! আসবেন বলেন নি তো !’ কথাটা এমনভাবে বললো যেন ইন্সপেক্টর তার বাসায় বেড়াতে এসেছেন।
জিলানী লক্ষ্য করলেন নিধি আজ সেজেছে। তাকে এর আগে কখনো লিপস্টিকে দেখেন নি, এই দেখলেন। চুলটা সুন্দর করে বেঁধেছে। ম্যাচিং করে নতুন শাড়ি ও ব্লাউজ পরেছে। হাল্কা গয়না কানে এবং গলায়। সব মিলিয়ে সাড়ে পাঁচ ফুট উচ্চতার শীর্ণাঙ্গী নিধিকে আজ অন্যরকম সুন্দর লাগছে, একথা যে দেখবে সেই বলবে।
‘কোথাও যাচ্ছিলেন নাকি ?’ জিলানী জিজ্ঞেস করলেন।
‘না, কোথায় যাবো ? ইচ্ছে হলো আজ একটু সাজগোজ করি। আজ আমার জন্মদিন। কেউ তো নেই যে ‘হ্যাপি বার্থ ডে’ বলবে। তাই নিজেকে নিজেই উইশ করলাম। আপনি বসুন প্লিজ।’ নিধি খোলা মনে কথাগুলো বললো।
‘ও তাই ? শুভ জন্মদিন !’ ড্রয়িং রুমে বসতে বসতে জিলানী শুভেচ্ছা জানালেন।
জিলানী তাকে উইশ করেছে দেখে নিধি ভীষণ আপ্লুত হলো। সে জিলানীর প্রায় কাছাকাছি চলে এলো। হেসে হেসে বললো,
‘থ্যাংক ইউ স্যার। আমি সত্যিই খুব খুশি।’
জিলানী দেখলেন, স্বত:স্ফূর্ত হাসিতে এ নারীকে আজ প্রকৃতই সুন্দর লাগছে। আহা ! তার ভেতরটা যদি সত্যিই এমন সুন্দর হতো ! হঠাৎ ভাবলেন, নিধি তাকে সিডিউস করার চেষ্টা করছে না তো ? এ ধরনের নারী প্রয়োজনে সব পারে ! জিলানী নিজের মুডকে সিরিয়াস করলেন। তারপর মোবাইলে সহযোগী সোহরাবকে ঘরের ভেতরে আসার জন্য বললেন। সোহরাব পরমুহূর্তেই ভেতরে চলে এলো।
‘চা দেবো ?’ নিধি জিজ্ঞেস করলেন।
‘না। আপনি আমাদের সামনে বসুন। কথা বলি।’ জিলানী বললেন।
নিধি মুখামুখি সোফাটায় বসলো। সে লক্ষ্য করলো যে সোহরাব তার আপাদমস্তক পর্যবেক্ষণ করছে। নিধি এবার নিজেও একটু গাম্ভীর্যপূর্ণ ভাব ধারণ করলো। জিলানী চট করে বললেন,
‘আপনার নামে ‘পাওয়ার অব এটর্নি’ করা কাগজটা একটু দেখান তো !’
‘পাওয়ার.. কী বললেন ?’ নিধি কিছু বুঝতেই পারলো না এমনভাবে প্রতিক্রিয়া জানালো।
‘পাওয়ার অব এটর্নি।’ জিলানী পুনরুক্তি করলেন।
‘এটর্নি টেটর্নি তো জানি হাইকোর্টে থাকে। তাদের পাওয়ার এখানে কেমন করে আসে …ঠিক বুঝতে পারছি না !’ নিধি অবাক কন্ঠে বললো।
‘বুঝতে ঠিকই পারছেন। কোনটা অভিনয় আর কোনটা সত্যি আমরা কিন্তু ধরতে পারি।’
‘আমি অভিনয় করছি না।’
‘শুনুন, রেজাউদ্দিন সাহেবের অসুস্হকালীন বা অবর্তমানে তাঁর সম্পত্তি দখলে রাখার স্বার্থে ওনার স্বাক্ষর জাল করে রিফাত একটি ক্ষমতাপত্র তৈরি করেছে বলে আমাদের কাছে স্বীকার করেছে। ওটাই পাওয়ার অব এটর্নি।’
‘কে কি স্বীকার করেছে না করেছে তার সাথে আমাকে মেলাচ্ছেন কেন ? আমি এসবের কী জানি ?’
নিধি রেগে গেলো।
‘এভাবে রাগ দেখাবেন না। আপনি মহিলা বলেই একটা সীমা রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। শুনুন, রিফাতের পাওয়ার অব এটর্নি তৃতীয় তলা নিয়ে। আমাদের ধারণা, এই ডুপ্লেক্স বাড়ি এবং অবশিষ্ট ভূমি দখলে রাখার একটা ক্ষমতাপত্র একই সাথে আপনিও জাল স্বাক্ষরে তৈরি করেছেন। আমাদের বিশ্বাস, রেজা সাহেবের স্বাক্ষর করা একটি চেক থেকে স্বাক্ষরের ছবি তুলেছেন এবং রিফাতকে দিয়ে কম্পিউটারের মাধ্যমে তার ছাপ ডকুমেন্টে ফেলেছেন। ’ জিলানী জোর দিয়ে বললেন।
‘একদম বানোয়াট। ছি: ! যে জিনিস আমি জানি না, বুঝি না সে বিষয়ে আমাকে দিয়ে জোর করে স্বীকার করাতে চান ? এটা ভীষণ অন্যায় ! আমি সব সময় আমার কাজ দিয়ে এবং ব্যবহার দিয়ে তাঁদের প্রতি বিশ্বস্ত থেকেছি। কেন করবো আমি এমন কাজ !’ নিধি জোরগলায় প্রতিবাদ জানালো।
‘আমরা আপনার কক্ষ তল্লাশী করে দেখতে চাই।’ জিলানী বললেন।
‘একশ’ বার করুন। এখনই করুন।’ নিধি দৃঢ়ভাবে বললো।
জিলানী এবং তাঁর সহযোগী সোহরাব নিধির রুমে গিয়ে নিধির বেডরুমের আনাচে কানাচে তল্লাশী করলেন। কিন্তু কোথাও পাওয়ার অব এটর্নির কোন কাগজ পেলেন না। ভাবলেন, হয়তো তাদের ধারণা কেবল ধারণাই।
তল্লাশীকালে জিলানী নিধির ওয়ার্ড্রবের ড্রয়ারে তিন পাতা ঘুমের বড়ি পেলেন। জিজ্ঞাসা জবাবে নিধি বললো যে বর্তমানে ঘুমের বড়ি না খেলে তার ঘুম হচ্ছে না। সে জন্যই কিনে রাখা।
এরপর আরেক ড্রয়ারে এক প্যাকেট গর্ভনিরোধক বড়ি পাওয়া গেলো। জিলানী এবং সোহরাব উভয়ে অবাকদৃষ্টিতে তাকালেন। কিন্তু নিধি নির্বিকার। সে জানালো এগুলো সে তার বুয়ার মেয়ের জন্য এনে রেখেছে। বুয়ার মেয়েটা সদ্যবিবাহিতা।
অত:পর জিলানী এ দুটো জিনিস জব্দ করলেন। নিধিকে বললেন,
‘এখন থেকে আমার অনুমতি ছাড়া আপনি এ বাড়ি থেকে কোথাও যাবেন না।’
এ কথা বলেই জিলানী ও তাঁর সহযোগী ও বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন।
রাতে সাজিয়া এবং জিলানী একসাথে ডিনার করলেন। সাজিয়া লক্ষ্য করলেন তার স্বামীর মুড তেমন ভালো নেই। দুজনের কেউই খুব একটা কথা বললেন না।
ঘুমোতে যাবার আগে জিলানী তাঁর ল্যাপটপটা আরেকবার অন করলেন। ই-মেইল চেক করতে থাকলেন। হঠাৎ তাঁর চোখ দুটো কপালে উঠলো। তিনি অস্ফুটভাবে উচ্চারণ করলেন—
ও মাই গড !
১২ জানুয়ারি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-সিঙ্গাপুর-সিডনি ফ্লাইটের যেসব যাত্রী প্লেনে বোর্ডিং নিশ্চিত করেছিলেন তাদের তালিকা বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন থেকে এবং সংশ্লিষ্ট ‘গ্যালাক্সি এয়ারলাইনস’ থেকে ই-মেইলে প্রেরণ করা হয়েছে।
যাত্রীদের তালিকায় মিস নাবিলা জেরিন, তথা জেরিন এর নাম নেই।
{চলবে}